বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল রাজ্যে নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার অন্যতম হাসপাতাল। এ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই এই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেই করোনা সন্দেহে রোগীদের ভর্তি করা, বিদেশ থেকে আসা মানুষের পরীক্ষা নিরীক্ষা, অন্য রাজ্য থেকে আসা মানুষের শারীরিক পরীক্ষা সহ যাবতীয় করোনা সম্পর্কিত কার্যকলাপ এখানেই হচ্ছিল। এরপর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করতেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি,বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমের চিকিৎসক, নার্স,স্বা স্থ্যকর্মীরা একের পর এক করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তবে সে সবের থেকে দূরে ছিল করোনা চিকিৎসার আঁতুড়ঘর হিসেবে চিহ্নিত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। এখানকার কর্তব্যরত কেউ প্রথম দিকে করোনা আক্রান্ত না হওয়ায় অনেকটাই স্বস্তিতে ছিল আইডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে মাসখানেক আগে দুই সাফাই কর্মী প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়।
advertisement
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ভিতরেই কর্মী আবাসন। এই কর্মী আবাসনের ভিতরে মূলত হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীরা থাকেন। সোমবার থেকে এই কর্মী আবাসনের ৩ সাফাই কর্মীর পরিবারের ৭ সদস্যের জ্বর, কাশি,গলা ব্যথা এর মত করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। বুধবার তাদের লালা রসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সেই নমুনার রিপোর্ট আসলে দেখা যায় এই ৭ জনেরই করোনা পজিটিভ। করোনা আক্রান্ত ৭ জনকেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্য দিকে কর্মী আবাসনে একসঙ্গে ৭ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক দানা বেঁধেছে।
করোনা আক্রান্ত ৭ জন এর সংস্পর্শে কারা, কারা এসেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেককে চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইন করা হবে বলে জানিয়েছে আইডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, "আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। গোটা কর্মী আবাসন জীবাণুমুক্ত করা হবে। করোনা আক্রান্ত প্রত্যেকে সুস্থ আছে। প্রতিদিনই এখানকার গ্রুপ ডি কর্মীদের শারীরিক পরীক্ষা করানো হচ্ছে।"
তবে কর্মী আবাসনের বাসিন্দারা চূড়ান্ত আতঙ্কিত। কল্পনা রজক নামে এক বাসিন্দা জানান, "আমরা চূড়ান্ত আতঙ্কের মধ্যে আছি। এমনিতেই নোংরা,আবর্জনার মধ্যে আমাদের দিন কাটাতে হয়। কোনও রকম নিরাপত্তা,সতর্কতা ছাড়াই আমাদের পরিবারের লোকদের হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের নিজেদের ভাগ্য নিজেদেরকেই দেখতে হবে।"