বাস চালানো এবং বাসের ভাড়া সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বুধবার বাস এবং মিনিবাস এ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । বৈঠক শেষে তিনি সোমবার থেকে বাস নামানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত দেন । তবে মন্ত্রী জানিয়েছেন, বাস ভাড়ার বিষয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বাস মালিক সংগঠন । তবে সরকারি বাসের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে বলেই জানিয়েছেন তিনি । এমনকি কোনও বাসে ২০ জোনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না বলে আবার স্পষ্ট করেছেন তিনি । এদিকে, আজ থেকেই শহরে চালু হয়েছে সরকারি বাস এবং ক্যাব পরিষেবা ।
advertisement
লকডাউনের আগে বাসের নুন্যতম ভাড়া ছিল ৭ টাকা। তারপর প্রতি স্টেজে ভাড়া বেড়েছে এক টাকা করে কলকাতা শহরের ক্ষেত্রে। জেলার ক্ষেত্রে বাসের ভাড়া ন্যূনতম ৭ টাকাই আছে। তারপরে প্রতি কিলোমিটারে সাধারণ বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ে ৭০ পয়সা করে। এক্সপ্রেস বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ে ৭৫ পয়সা করে। বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রাথমিকভাবে যে ভাড়ার তালিকা দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি করে হিসাব কষেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে...
কলকাতায় প্রথম ৪ কিমি ভাড়া ৭ টাকা । ৪ থেকে ১২ কিমি ভাড়া ৮ টাকা । ১২ থেকে ১৬ কিমি ভাড়া ৯ টাকা । ১৬ থেকে ২০ কিমি ভাড়া ১০ টাকা । ২০ থেকে ২২ কিমি ভাড়া ১১ টাকা । কলকাতায় এই ভাড়া প্রাথমিকভাবে দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা । ফলে প্রথম ৪ কিমি ভাড়া ১৪ টাকা হবে । ৪ থেকে ১২ কিমি ভাড়া ১৬ টাকা । ১২ থেকে ১৬ কিমি ভাড়া ১৮ টাকা । ১৬ থেকে ২০ কিমি ভাড়া ২০ টাকা । ২০ থেকে ২২ কিমি ভাড়া ২২ টাকা হবে।
অন্যদিকে, জেলায় বাস চলে দুই ধরণের । তাতে ন্যূনতম ভাড়া ৭ টাকা । যা ৪ কিলোমিটার অবধি নেওয়া হয় । এরপর সাধারণ বাস প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ে ৭০ পয়সা করে । এক্সপ্রেস ভাড়া বাড়ে ৭৫ পয়সা করে প্রতি কিলোমিটারে । এটা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে । ০ থেকে ৪ কিলোমিটার ভাড়া হবে ১৪ টাকা। এরপর প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে সাধারণ বাসে ১.৪০ পয়সা। এক্সপ্রেসে ভাড়া বাড়বে ১.৫০ পয়সা হারে ।
এদিকে, বাস মালিক সংগঠনের দাবি তাদের প্রতিদিন বাস চালাতে সাধারণত খরচ হয় ৬০০০ টাকা। খরচের হিসেব তারা দিচ্ছেন, প্রতিদিন বাস চালানোর খরচ । চালক ৮০০ টাকা, কন্ডাক্টর ৪৫০-৫০০ টাকা, হেল্পার ৩০০-৩৫০ টাকা, ডিজেল ২০০০ টাকা, ব্যাঙ্কের কিস্তি ১৭০০ টাকা, অন্য খরচ ৫০০ টাকা । অর্থাৎ সব মিলিয়ে বাস রাস্তায় নামালে খরচ হয় ৬০০০ টাকা ।
এই হিসেব অনুযায়ী তাদের বক্তব্য ২০ জন যাত্রী নিয়ে সারাদিন লকডাউনে বাস চললেও তাদের ক্ষতি হবে প্রায় ৩০০০ টাকা । বাস সংগঠনের নেতা রাহুল চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, "মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণ মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আমাদের অসুবিধার কথা জানান হয়েছে।" রাজ্য সরকারের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, বাস সংগঠন নেতা তপন বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, "কেন্দ্র লকডাউন না তুললে, লোকাল ট্রেন না চালালে যাত্রী হবে না বাসে । তাই ভাড়া বৃদ্ধি করেও আদৌ কতটা লাভ হবে তা বুঝতে পারছি না ।" এরই মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে একই রুটে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলবে আলাদা ভাড়ায় । বাস মালিক সংগঠনের দাবি, যাত্রীরা কম টাকায় সেই সরকারি বাসকে বেছে নেবেন । ফলে ভাড়া বাড়িয়েও বাস চালানো লাভজনক নয় বলে মনে করছে বাস মালিকরা ।