করোনা সংক্রমণ যে দেশে আরও জটিল আকার ধারণ করছে, শনিবারের পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট৷ গত চব্বিশ ঘণ্টায় রেকর্ড ১৪ হাজার নতুন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে৷ যার ফলে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে৷
এ দিন সিনিয়র মন্ত্রী এবং আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় করোনা চিকিৎসা পরিকাঠামো কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো বৃদ্ধির পাশাপাশি হাসপাতালের বেড এবং চিকিৎসা পরিষেবা বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়৷ বিশেষত বড় শহরগুলিতে সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার৷
advertisement
বৈঠকের শেষে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে 'জরুরি পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনা' তৈরি করে রাখতে আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ সরকারের নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মাথায় রেখে শহর এবং জেলা ধরে ধরে হাসপাতাল এবং বেডের সম্ভাব্য চাহিদা অনুযায়ী তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে৷
দিল্লিতে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে জুলাইয়ের শেষ দিকে রাজধানীতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৫ লক্ষ ছুঁতে পারে৷ এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজাল, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং অন্যান্য সিনিয়র আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বয় রেখে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ রবিবরাই এই বৈঠক করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের পর্যালোচনা বৈঠকে আলোচনায় দেখা যায়, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের দুই তৃতীয়াংশই পাঁচটি রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে৷ তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় শহরের অবস্থা সবথেকে খারাপ৷ সেই তালিকায় রয়েছে, মুম্বই, দিল্লি, আহমেদাবাদ, চেন্নাই, সুরাত, পুণে, ইনদওর এবং কলকাতা৷
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে দেখা যায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩,০৮,৯৯৩৷ কিন্তু শনিবার রাত ১০.৫০ মিনিট পর্যন্ত সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রকাশিত তালিকা ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৩ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯১৯৫৷ শুক্রবার রাত থেকে ধরলে ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ১৪,৭০০ ছাড়িয়েছে৷ মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৫২ জনের৷
তবে আশার কথা একটাই, দেশে ১ লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন৷ সেখানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজারের কাছাকাছি৷ জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট সুস্থ হওয়ার নিরিখে গোটা বিশ্বে ছ' নম্বরে রয়েছে ভারত৷ তালিকায় ভারতের আগে রয়েছে আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, ইতালি এবং জার্মানি৷ তবে মোট মৃত্যুর নিরিখে এ দিনের পর প্রথম দশে ঢুকে পড়েছে ভারত৷ আমেরিকা, ব্রাজিল, গ্রেট ব্রিটেন, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, মেক্সিকো এবং বেলজিয়ামের পর নবম স্থানে রয়েছে ভারত৷