বর্ধমান পৌরসভা এলাকায় বর্তমানে একশো দুজন অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। তাঁরা পৌরসভার অধীনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করছেন। এই মুহূর্তে মূলত করোনা নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাদের। কোন ব্যক্তির করোনার উপসর্গ রয়েছে,অথচ তিনি এখনও চিকিৎসার আওতায় আসেননি তা খুঁজে বের করাই মূলত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই স্বাস্থ্যকর্মীদের। এর পাশাপাশি যাঁদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা তারা তা যথাযথভাবে পালন করছেন কিনা সেই সব তথ্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিয়মিত সংগ্রহ করে তা পাঠাতে হচ্ছে পুরসভায়, স্বাস্থ্য দপ্তরে। আবার কোনও এলাকায় করোনা আক্রান্তের হদিশ মিললে সেই এলাকা চিহ্নিত করা থেকে শুরু করে আক্রান্ত সংস্পর্শে কতজন এসছেন এলাকায় গিয়ে সেই সব তালিকা সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের।
advertisement
স্বাস্থ্যকর্মী পাপিয়া দত্ত চৌধুরী বললেন, শুধুমাত্র নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নয়, পরিবারের সকলের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। সেখানে প্রথমে একবার পলিথিনের মতো একটি পিপিই দেওয়া হয়েছিল। তা পরে কাজ করতে গিয়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম। সেই সময় একশো মিলিলিটারের একটি করে স্যানিটাইজার ও মাস্ক দেওয়া হয়েছিল। সেসব কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন নিজেদের পকেটের টাকায় স্যানিটাইজার,মাস্ক কিনে আমাদের কাজ চালাতে হচ্ছে। করোনার কাজ করার জন্য মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার।চার মাসে মাত্র দুই মাসের টাকা পাওয়া গেছে। বাকি মাসগুলোতেও যাতে এই ভাতা পাওয়া যায় সেই দাবি জানাচ্ছি আমরা।
করোনা অবহেলা কাজ করার জন্য উপযুক্ত সরঞ্জাম ও পারিশ্রমিক বৃদ্ধির দাবিতে এদিন এই স্বাস্থ্যকর্মীরা বর্ধমান পৌরসভা বিক্ষোভ দেখায়। তাদের চাকরির মেয়াদ পঁয়ষট্টি বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা ও অবসরের পর পেনশনেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। কর্মীদের বক্তব্য, সারাজীবন কাজ করে অবসরের পর শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কাজ হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন এমন অনেক নজির রয়েছে। তাই ৬৫ বছর পর্যন্ত কাজ ও অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
বর্ধমান পৌরসভার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত কুমার গুহ বলেন,স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা যাতে এই পরিবেশে সুস্থ ভাবে কাজ করতে পারেন সেই জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সুবিধা তাদের দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য সরকার ঘোষিত ভাতা তাঁরা পাবেন। বাকি দাবিগুলো বিবেচনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
Saradindu Ghosh