এদিনের শপথের পর মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা কাজ করতে শিখেছি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। রাস্তায় থেকে কাজ করাটাই আমাদের দায়িত্ব। তিনি এমন দায়িত্বই আমাদের উপর ন্যস্ত করেন।" অন্যদিকে পোড় খাওয়া রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ভরসা মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায় মমতার কথার প্রতিধ্বনি। সুব্রত বলেন, "এবারের আমাদের রেজাল্ট সেরার সেরা। সততা নিয়ে এবং সাহস নিয়ে কাজ করি আমরা। এবারও সেইভাবেই কাজ করব।"
advertisement
২০১৬ থেকে মন্ত্রীসভায় রয়েছেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। এদিন দ্বিতীয় বারের জন্য শপথ গ্রহণের পরে তিনি বলেন, "চ্যালেঞ্জ নিয়ে জিতলে আনন্দ থাকে। বাংলার মানুষ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করেছে। মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন আমরা বাংলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করব। আমি খুশি পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি আমি।" নিজের কেন্দ্র মন্তেশ্বরের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান সিদ্দিকুল্লা।
অন্যদিকে ভোট প্রচার থেকে নির্বাচনের দিন রীতিমতো দাবাং মেজাজে থাকা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এদিন বলেন, "আমাদের আসল লক্ষ্য ২০২৪। আমরা জয় ছিনিয়ে আনব। যে সব কাজের কথা বলা হয়েছে তা দিয়েই আমাদের সরকার কাজ শুরু করবে। কোভিডে কাজ করাটাই এই মুহূর্তের মূল লক্ষ্য।" একুশের মন্ত্রীসভায় খাদ্য মন্ত্রী থেকে বনমন্ত্রী হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। "কোভিডই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ" বললেন মন্ত্রী সুজিত বসুও। তাঁর কথায় "মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বারংবার বলেছেন মানুষের পাশে থাকতে হবে। সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাবো। দায়িত্ব যখন পেয়েছি, ভালো করে কাজ করব।"
এদিন মন্ত্রীসভায় শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪৩ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এর মধ্যে ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী। এই ১৯ জনের মধ্যে ১০ জন আবার স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত। রাজভবনের থ্রোন হলে অত্যন্ত অনাড়ম্বর ভাবে তৃতীয়বারের জন্য গঠিত হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীসভা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সান্নিধ্যে অনুষ্ঠিত হয় শপথগ্রহণ পর্ব। করোনার কারণেই এদিন ভার্চুয়াল শপথ নিলেন ব্রাত্য বসু, রথীন ঘোষ। শারীরিক অসুবিধের কারণে ভার্চুয়াল শপথ নিতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের গত দুইবারের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকেও। ২০১১-২০১৬ সালের মন্ত্রিসভা গঠনের যে আড়ম্বর, তা এবার করোনার কারণেই দেখানো গেল না। সূত্রের খবর এদিনই নবান্নতে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নব নির্বাচিত মন্ত্রীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছেন, করোনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, বিনম্র হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা বিধি মেনে শপথ সারা হল অতি সংক্ষেপে কোনও জাঁকজমক ছাড়া। কোনও অতিথি সমাগমও এদিন হয়নি রাজভবনে। শপথের পরে জাতীয় সঙ্গীতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হল। এ দিন মাত্র ৬ মিনিটে অনুষ্ঠান সারা হয়। অনুষ্ঠান শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল ধনখড় বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন নিজেদের মধ্যে।