আইসিএমআর-এর তথ্য উদ্ধৃত করে কুণালবাবু জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত গোটা দেশে ১,৮১,০২৬ জন সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৫ হাজারের কিছু বেশি৷ উদ্বেগ প্রকাশ করে কুণালবাবু বলেন, '১৩৫ কোটির দেশে এখনও ২ লক্ষ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা গেল না? সারা দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ আমাদের রাজ্যে তা আরও কমছে৷ নাইসেডে নমুনার সংখ্যা বাড়ার বদলে প্রতিদিন কমছে৷ এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের দেশে বা রাজ্যে কী হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা বোঝাই সম্ভব হবে না৷ এর কোনও একটা উপায় সরকারকে খুঁজে বের করতেই হবে৷'
advertisement
লকডাউন সফল করতে শুধুমাত্র পুলিশকে ব্যবহার করে মানুষকে ঘরে আটকে রাখার চেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকর কুণাল সরকার৷ তাঁর মতে লকডাউনের সময় পুলিশের থেকেও বেশি করে মানুষের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্যাথোলজিস্ট এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার করতে হবে৷ তা না হলে হটস্পট চিহ্নিত করে গোটা এলাকা ঘিরে রাখলেও কাজের কাজ হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কুণালবাবু৷ নমুনা পরীক্ষা করার উপরে জোর না দিলে একবার লকডাউন উঠে গেলে সংক্রমিত বহু মানুষ ভিড়ের মধ্যে মিশে যাবেন বলেও সতর্ক করেছেন ওই চিকিৎসক৷ যার জেরে ভারতেও আমেরিকা, স্পেন, ইতালির মতো ছবি দেখতে হতে পারে৷
কুণালবাবু সবথেকে বেশি চিন্তিত এ দেশের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক নিরাপত্ত নিয়ে৷ তাঁর অভিযোগ, এমনিতেই ভারতে পরীক্ষা করার হার কম৷ তার উপরে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার দিকটিও উপেক্ষিত হচ্ছে৷ কারণ, চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য ভাল গুণমানের সরঞ্জামের অভাব রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতালে৷ কোনও সন্দেহভাজন রোগীর করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট আসতে দু' থেকে আড়াই দিন লেগে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুণালবাবু৷ সেই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রোগীর সংস্পর্শে এসে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়ছে৷ এ রকম সংক্রমণের কারণেই ভিআইপি রোডের চার্ণক হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হয়েছে৷ কুণালবাবুর আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে দিন পনেরোর মধ্যে আরও অনেক হাসপাতালই বন্ধ করে দিতে হবে৷
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে কুণালবাবু বলেন, 'এই কারণেই আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে বেশি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন৷ আমেরিকা, ইউরোপের তুলনায় আমাদের দেশের জনসংখ্যা তরুণ প্রজন্মের মানুষ অনেক বেশি৷ ফলে এ দেশে চল্লিশ বছরের আশেপাশে অনেক চিকিৎসকই আক্রান্ত হচ্ছেন৷ আর এই চিকিৎসকদের থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যেও রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে৷'
