#কলকাতা: লকডাউনের বাজার কেমন হতে পারে? উত্তরের বাগবাজার আর দক্ষিণের কালীঘাট বাজার হতে পারে উদাহরণ।
করোনা আবহে দেড় মাস। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা করোনা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে একমাত্র পথ। ৪ সপ্তাহ লকডাউন চলার পরেও পুলিশ এবং প্রশাসনকে এখনও বোঝাতে হচ্ছে বাজারে গেলে সামাজিক দূরত্ব মানতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীকেও দিতে হচ্ছে বাজার বন্ধের মতো হুঁশিয়ারি। এইরকম পরিস্থিতিতে শহরে দু’টি বাজার উদাহরণ তৈরি করল। দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাট বাজার এবং উত্তর কলকাতার বাগবাজার।
advertisement
সকালে কালীঘাট বাজারের জন্য কিলোমিটার ছোঁয়া লম্বা লাইন। দূরত্ব মেনে পরপর ৫ জনকে বাজারের জন্য প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী বললেন, ৪০-৫০ মিনিট দাঁড়িয়ে মানুষ বাজারের জন্য অপেক্ষা করছেন। করোনায় অসুবিধা হলেও মানুষ তা মেনে নিচ্ছেন হাসিমুখে। বাজারের থলি হাতে দাঁড়ানো অনিমেষ করের কথায়, "করোনাকে পরাস্ত করতে সামাজিক দূরত্ব মেনে বাজার করলে ক্ষতি কি?" লম্বা লাইনে দাঁড়ানো মানুষের মধ্যেকার দূরত্ব বলে দিচ্ছে কতটা সচেতন এখানকার বাসিন্দারা। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের মূল বাজার বন্ধ সতর্কতা মূলক পদক্ষেপের কারণে। বাজার বসছে বাগবাজার সার্বজনীনের পুজো মণ্ডপ জুড়ে। বাজারে প্রবেশের মুখেই বড়বড় করে টাঙানো হোর্ডিং। তাতে লেখা, মাস্ক ছাড়া বাজারে প্রবেশ নিষেধ। সচেতনতার দাওয়াইতে কাজও হয়েছে। বাজার দেখলে মনে হবে যেন কোনও সিনেমার সেট। ক্রেতা বিক্রেতা সকলের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব গ্যাপ।
স্থানীয় পুরপিতা বাপি ঘোষ বলছেন, "প্রতিদিন মাইকিং চলছে। এছাড়া বাজারের মধ্যে হ্যান্ড মাইকে সচেতনতা চালানো হচ্ছে। হ্যান্ড সানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে বাজারে আসা ক্রেতাদের।" বনেদি কলকাতার বাগবাজার সবসময়ই আলাদা গুরুত্ব বহন করে। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী ব্রজেশ ঝা জানালেন, "কলকাতা পুরসভার অন্য সব ওয়ার্ডের মতো নয় বাগবাজার। ৭ নং ওয়ার্ডের মানুষ মন থেকে সচেতন। আমার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডারওয়েফ এর হয়ে বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ পৌঁছে দিতে গিয়ে দেখেছি মানুষের আবেগ ভালোবাসা। রাজনীতির বাইরে থেকে এলাকাকে দেখতে ভালবাসেন বাগবাজারের মানুষ।" উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার এই দুই বাজারের ছবি গোটা রাজ্যের কাছে উদাহরণ হতে পারে। করোনার মারণ ভাইরাসের কাছেও জমাট ডিফেন্স দুই বাজারের। যা গর্বিত করছে দুই এলাকার নাগরিকদের।