করোনার দাপটে বদলেছে প্রতিদিনের রুটিন। সকালে বাসের বদলে অনেকেরই ভরসা দু' চাকার বন্ধু সাইকেল। যে দু'চাকার যানটি হাত দিয়েও দেখতেন না অনেকেই, অদেখা হয়েই পড়ে থাকতো ঘরের এক কোণে, সেটাই এখন পরম বন্ধু। করোনার আবহে সামাজিক দুরত্ব ও বাসের দীর্ঘ অপেক্ষা থেকে রেহাই পেতে বন্ধু হয়েছে সাইকেল।
কলকাতা পুলিশ এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্যাডেলে চাপ দিতে একটু ভয় পেতেন সাইকেল আরোহীরা। এই বুঝি কোনও পুলিশ এসে সাইকেল আটকে করল জরিমানা। করোনার জেরে শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তাতেই সকাল থেকে বিকাল দৌড়চ্ছে সাইকেল। আনলক ১-এর প্রথম দিন থেকেই শহরে বেড়েছে বাইক ও সাইকেলের সংখ্যা। যে সংখ্যক সাইকেল শহরের রাস্তায় ছুটছে তা অবাক করে দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদের।
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী সোমবারই ঘোষণা করেছিলেন, সাইকেল যাওয়ার জন্য আলাদা রাস্তার ব্যবস্থা করুক পুলিশ। সেই মতো কাজও শুরু করে লালবাজার। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা নিজেই ট্যুইট করে জানান, আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত শহরের রাস্তায় ছুটবে সাইকেল। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অর্থাৎ জনবহুল রাস্তা ছেড়ে বিকল্প রাস্তা দিয়েই শহরের অলি-গলি ধরে যেতে পারবে সাইকেল। তবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও উড়ালপুলে সাইকেল চালানো য়াবে না বলে জানিয়েছেন নগরপাল৷ আগে কলকাতা শহরের বেশ কিছু রাস্তায় সাইকেল দেখলেই পুলিশ কর্মী জরিমানা করতেন, এখন আর দিতে হবে না জরিমানা।
কলকাতার নগরপালের এই নির্দেশের পরে মুখে অনেকটাই স্বস্তির ছাপ সাইকেল আরোহীদের। পিন্টু সামন্ত রোজ বাস না পেয়ে হিন্দমোটর থেকে সাইকেল চালিয়ে যান বড়বাজারে। তিনি জানান, এই নির্দেশ দরকার ছিল, এখন পেটের দায়ে এই সাইকেলটাই ভরসা। একই কথা সুমন্ত রায়ের। বাইপাসের ধারে বাড়ি হলেও যেতে হয় পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি অফিসে, না গেলেই কাটা যাবে বেতন। তিনিও জানান, কম বেতনে যাতায়াতে সম্বল সাইকেলই। অতিরিক্ত খরচা করে যাতায়াত করা সম্ভব নয়, ফলে শহরের রাস্তায় সাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া ভাল খবর।
SUSOBHAN BHATTACHARYA