TRENDING:

করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাজ্য, আশাবাদী চিকিৎসকরা

Last Updated:

করোনা রোগী সুস্থ হলে তাঁর দেহে কোভিডের মোকাবিলায় সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন করোনা-আক্রান্তের শরীরে সেই অ্যান্টিবডি পাঠালে কী ফল হয়, তা দেখতেই গবেষণা হচ্ছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
ABHIJIT CHANDA
advertisement

#কলকাতা: কোভিড-১৯ বা নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠেছেন যে সমস্ত মানুষ, তাঁদের শরীরে এই রোগের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তাঁদের রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে অন্য কোভিড-১৯ বা করোনা আক্রান্তকে দেওয়া হলে, সেই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। এই পদ্ধতিকেই প্লাজমা থেরাপি বলা হয়। ডিপথেরিয়ার চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করে জার্মান চিকিৎসা বিজ্ঞানী এমিল ভন বেরিং নোবেল পেয়েছিলেন ১৯০১ সালে। ১১৯ বছর পরেও দেখা যাচ্ছে, সেই পদ্ধতি প্রাসঙ্গিক। যে সংক্রমণের চিকিৎসা নেই, সেই সব অসুখের অনেকগুলির ক্ষেত্রেই এমন প্লাজমা থেরাপির পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ভালো ফল মিলেছে।

advertisement

বর্তমানে করোনার ক্ষেত্রেও সেই চেষ্টা চলছে।করোনাজয়ীর রক্তে করোনা আক্রান্তকে সুস্থ করার পরিকল্পনা আগেই করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।পরীক্ষামূলক সেই কাজ অবশেষে শুরু হলো বুধবার থেকে। পোশাকি নাম, প্লাজমা থেরাপি। চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বেশ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই এই থেরাপির সুফল মিলেছে। মহারাষ্ট্র,কেরালা ও দিল্লির পাশাপাশি আইসিএমআরের উদ্যোগে ২২টি চিকিৎসা কেন্দ্রে বর্তমানে এই থেরাপির ট্রায়াল চলছে। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন বাংলা।

advertisement

করোনা রোগী সুস্থ হলে তাঁর দেহে কোভিডের মোকাবিলায় সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন করোনা-আক্রান্তের শরীরে সেই অ্যান্টিবডি পাঠালে কী ফল হয়, তা দেখতেই গবেষণা হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির (আইআইসিবি) সঙ্গে যৌথ ভাবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনো হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে এমন গবেষণার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। তবে দাতা এবং গ্রহীতা চিহ্নিত করার মাপকাঠি রয়েছে। গবেষণাটির প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এবং প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর তথা আইআইসিবি-র ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আর্থিক খরচ জোগাচ্ছে কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)। আক্রান্ত সুস্থ হওয়ার ২১-২৮ দিন পরে দাতার প্লাজমা সংগ্রহ হবে।

advertisement

অন্যদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক প্রসূন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ২৮ দিনের আগে প্লাজমা সংগ্রহ করতে হলে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আরটিপিসিআর-এ দাতার অন্তত দু’টি নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ হতে হবে। যে আক্রান্তদের করোনা বিপদে ফেলতে পারেনি, তাঁদের প্লাজমা ‘ব্লাড ট্রান্সফিউশন’ পদ্ধতিতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্য অসুখের জেরে গুরুতর অসুস্থ মানবদেহে পাঠানো হবে। তাঁরা ৪০ জন রোগীর উপরে প্লাজ়মা থেরাপি প্রয়োগ করে কী ফল মেলে, তা দেখতে চাইছেন। গ্রহীতার ইমিউন সিস্টেমের কোষের সংখ্যা, তাদের কর্মক্ষমতা, দেহে জৈব রাসায়নিকের পরিমাণ দেখার পাশাপাশি ভাইরাসের সিকুয়েন্স করা হবে। ‘‘হয়তো দেখা গেল, প্লাজমা থেরাপি সকলের ক্ষেত্রে কাজ করছে না। সেটা কেন হল, তা বুঝতে পরীক্ষা করা হবে। ‘‘দাতার রক্ত থেকে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তা দেখতে হবে। সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বিচার্য।’’

advertisement

সম্ভাব্য দাতাদের অন্যতম উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা মনামী বিশ্বাস। স্কটল্যান্ড ফেরত ওই তরুণী দেশে ফিরেই করোনায় আক্রান্ত হন। রাজ্যে তৃতীয় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি তিনি। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরই তিনি জানান, প্লাজমা থেরাপিতে অংশগ্রহণ করতে পারলে তিনি খুশি হবেন। গত ১৮ মে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মনামী এবং এক সুস্থ হয়ে ওঠা চিকিৎসকের সব শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। এরপর বুধবার সকাল থেকেই তোড়জোড় শুরু হয় মনামির প্লাজমা সংগ্রহ করার। এদিন কলকাতা মেডিকেল কলেজে ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে মনামী শরীফ থেকে ৫০০ মিলিলিটার প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই প্লাজমা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অন্য এক সঙ্কটজনক করনা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

রাজ্যে করোনা চিকিৎসার গবেষণায় প্রথম প্লাজমা ডোনার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা এই তরুণী স্বভাবতই অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। "করোনা চিকিৎসার, গবেষণার অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। আমার প্লাজমা দিয়ে অন্য কোনও মরণাপন্ন করোনা আক্রান্ত রোগী যদি বেঁচে ওঠে তবে আমি সার্থক হব। আরও বেশি করে মানুষ যেন এগিয়ে আসে এই প্লাজমা দানে। তবেই করোনা মুক্তির পথে আমরা এগোতে পারবো।"অকপট স্বীকারোক্তি করোনা জয়ী তরুণীর।

বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাজ্য, আশাবাদী চিকিৎসকরা
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল