কোনও স্কুলে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ আবার কোনও স্কুলে টিউশন ফি বাদে অন্যান্য ফি মকুবের প্রতিবাদে আন্দোলন চালাচ্ছে অভিভাবকরা। কখনও আবার রাস্তায় অবরোধ করছেন অভিভাবকরা। লকডাউনের শুরুর পরপরই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেসরকারি স্কুলগুলোতে চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য নতুন করে ফি বৃদ্ধি না করার আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়ার অধীনে থাকা একাধিক নামকরা বেসরকারি স্কুল নয়া শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ফি বৃদ্ধি করেনি। কিন্তু টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি না নিলে তাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীদের বেতন সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হবে বলে চিঠি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কলকাতার বিশপ। এই চিঠি পাঠিয়ে বিশপ পরিতোষ ক্যানিং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করার আর্জিও রেখেছেন ।
advertisement
কলকাতার লা মার্টিনিয়র ফর বয়েস, লা মার্টিনিয়র ফর গার্লস,প্র্যাট মেমোরিয়াল স্কুল, সেন্ট থমাস স্কুল খিদিরপুর, সেন্ট থমাস গার্লস স্কুল খিদিরপুর, সেন্ট থমাস চার্চ স্কুল হাওড়া, সেন্ট থমাস স্কুল ফ্রি স্কুল স্ট্রীট, সেন্ট পলস মিশন স্কুল,সেন্ট জেমস স্কুল, ইউনিয়ন চ্যাপেল স্কুল এবং স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল। কলকাতার এই স্কুলগুলিতে আপাতত টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি মকুব হচ্ছে না। অন্তত সোমবার কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিংয়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠির পর কার্যত স্পষ্ট।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা ২ পাতার চিঠিতে কলকাতার বিশপ বলেছেন " বর্তমানে রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে চার্জ অফ নর্থ ইন্ডিয়ার অধীনে থাকা স্কুলগুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মেনে আমরা ফি বৃদ্ধি করিনি চলতি শিক্ষাবর্ষে। আমাদের বেশিরভাগ স্কুল দেড়শ বছর থেকে আড়াইশো বছর পর্যন্ত পুরনো। স্কুলগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে প্রচুর অর্থ খরচ হয়। লকডাউন এর কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও সিসিটিভি থেকে শুরু করে একাধিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চুক্তি মোতাবেক আমাদের স্কুলগুলিকে প্রচুর টাকা দিতে হয়। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে আমাদের শিক্ষকদের স্কুল গুলি থেকে বেতন দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে যদি টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি না নেওয়া হয় তাহলে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে সংকটে পড়তে হতে পারে। তবে শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রেই নয় এর প্রভাব পড়বে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরেও। আমাদের তরফ এ আবেদন মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন।"
মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং বলেন " অভিভাবকদের কাছে আবেদন রাখছি তারা নিজেদেরকে সংযত রাখুন। আমরা কাউকে ফি দেওয়ার জন্য জোর করছি না।যে যেরকম পারবেন সে সেরকম ফি দিতে পারেন।স্কুলগুলি কেও আমরা সেটা জানিয়েছি।" যদিও বিশপের তরফে পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনো মন্তব্য করতে চাননি। সোমবারের পর মঙ্গলবার কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি স্কুলে ফি বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন অভিভাবকরা। অন্যদিকে অন্যান্য ফি মকুব করার প্রসঙ্গে মঙ্গলবারে জিডি বিড়লা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেনি। তা নিয়ে আগামীকাল থেকে আন্দোলনের আশঙ্কা রয়েছে স্কুল চত্বরে।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়