#কলকাতা: সারা বিশ্বজুড়ে নভেল করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক আর কাটছেই না। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু মিছিল চলছেই। নভেল করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে মানুষের মধ্যে চূড়ান্ত কৌতূহল ছিল। অনেক মানুষের পরীক্ষা করার জন্য এই অসৎ চেষ্টা চালাচ্ছিল ওই ক্লিনিকগুলি । যদিও স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী একমাত্র কোনও চিকিৎসক বা হাসপাতালের তরফ থেকে লিখে দেওয়া না হলে কোনও ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। এছাড়াও কেন্দ্রীয় বা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন ছাড়া কোনও পরীক্ষাগার বা ক্লিনিক করোনা পরীক্ষা করতে পারবে না।
advertisement
তবে কলকাতার কাঁকুড়গাছির ত্রিবেণী ক্লিনিক অবৈধভাবে করোনা পরীক্ষা করছিল। এক নাগরিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তদন্তের ভিত্তিতে দেখা যায়, এই ক্লিনিকটির কোনও সরকারি অনুমোদন নেই । ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ বা আই সি এম আর এর কোনও অনুমোদন নেই । সম্পূর্ণ আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে এই বেসরকারি ক্লিনিক করোনা পরীক্ষা করার ব্যবসা রমরম করে চালাচ্ছিল। স্বাস্থ্য দফতর এই ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দেয়। ২০১৭ সালের রাজ্য ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন অনুযায়ী ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই ক্লিনিকের মালিকের বিরুদ্ধে। ফুলবাগান থানায় এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার সকালেই ফুলবাগান থানা পুলিশ এই ক্লিনিকের সামনে ব্যারিকেড করে দেয় এবং ক্লিনিকটি সিল করে দেয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় ক্লিনিকের কর্ণধার রতন লাল গুপ্তাকে তার সল্টলেকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে এই গ্রেফতার। প্রতারণা, ষড়যন্ত্র, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনে মামলা করা হয়। এই ঘটনায় আরও দুই কর্মী জড়িত। তারা পলাতক।
এই ক্লিনিকে যে সমস্ত করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই রিপোর্ট নেগেটিভ দেওয়া হয়। বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানান, এই ধরনের রিপোর্টে বড় সড় সমস্যা হতে পারে। কোনও করোনা পজিটিভ ব্যক্তির যদি নেগেটিভ রিপোর্ট আসে, তবে তাঁর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে চারপাশে। নেগেটিভ রিপোর্ট সম্পন্ন ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে, এলাকায় এবং গোটা সমাজে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এই ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, চিকিৎসক বা হাসপাতালের নির্দেশ মতো সাধারণ মানুষ সরকারি ১১টি পরীক্ষা কেন্দ্র এবং বেসরকারি ৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন। এর বাইরে কোথাও যদি করোনা পরীক্ষা করা হয়, তা শুধু বেআইনি নয় রিপোর্টও সঠিক হবে না।