কিন্তু অনলাইনে শ্রাদ্ধ-শান্তি বা পিন্ডদান! সেটাও কি সম্ভব? অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল করোনা জুজু। লক ডাউনের দৌলতে খাস এই শহর কলকাতাতেই শতাধিক শ্রাদ্ধ হয়েছে রীতিমত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। চোখ কপালে তুলে কি হবে, গয়ায় না গিয়েও ভিডিও কনফারেন্সে শতাধিক মানুষ পিন্ডদান করেছেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে, মৃতের পরিবার পরিজনের শ্রাদ্ধ-শান্তি করতে পুরোহিত লাগে। শ্রাদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস। কিন্তু লক ডাউনের জেরে বন্ধ সব দোকানপাট। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরোহিতরা বাড়ি যেতে চাইছে না বা অনেকক্ষেত্রে পারছেন না। এজন্যই মৃতের শ্রাদ্ধ-শান্তি করতে চূড়ান্ত নাস্তানাবুদ হচ্ছে পরিবার পরিজনরা।
advertisement
বৈদিক পুরোহিত ও পণ্ডিত মহামিলন কেন্দ্র এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের কলকাতার টালিগঞ্জ ও গয়া শাখা এই অবস্থায় অনেক মানুষেরই পাশে দাঁড়িয়েছে। দুটি সংগঠনেরই বক্তব্য, 'আতুরে নিয়ম নাস্তি।' অর্থাৎ জরুরী পরিস্থিতিতে পারলৌকিক ক্রিয়া দূর থেকে অনলাইনে করা যায়, তা শাস্ত্রবিরোধী নয়। বেদে এভাবে পুজোর উল্লেখ না থাকলে শাস্ত্র মানুষের স্বার্থে। ফলে এতে কোনো সমস্যা হবে না। হিন্দু শাস্ত্রের বিধান অনুযায়ী, ভিডিওকলে পুরোহিতের সামনেই শ্রাদ্ধকর্তা প্রয়োজনীয় আচার-নিয়ম সারতে পারবেন। ফলে ভিডিও কনফারেন্স বা স্কাইপের মাধ্যমে এটা করা সম্ভব। মানুষের স্বার্থে এভাবে কাজ করলে কোন নিয়মভঙ্গ হয় না।
কঠোর নিয়ম-নীতি দূরে সরিয়ে করোনা আতঙ্ক এখন সবাইকেইএকসূত্রে বেঁধেছে।যার পরিণামে সম্প্রতি নববর্ষের পুজো অনলাইনে সম্পন্ন করেছেন অনেকে। আবার অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোও অনলাইনেই সম্পন্ন হবে অনেকের বাড়িতেই। আগামী দিনে করোনা ভয় মুছে যাওয়ার পর পুজো আর্চার ক্ষেত্রে এক নতুন সমীকরণ হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
ABHIJIT CHANDA