তবে অরবিন্দের দাবি, টিকার সার্টিফিকেটের কথা বললে স্যারের কাছে ধমক খেতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ভ্যাকসিন দেবাঞ্জন দেব পেলেন কোথা থেকে? অরবিন্দ বৈদ্যের সন্দেহ, 'অফিসে অনেক লোক আসত। তাদের ভিজিটিং স্লিপগুলো দেখে মনে হয়েছিল, গৌতম এন্ড গৌতম লিখে একটি লোক স্যারের সঙ্গে দেখা করত। তিনি অনেক পেটি ভর্তি জিনিস দিয়ে যেতেন।' এজরা স্ট্রিটে গৌতম এন্ড গৌতম একটি পাইকারি এবং খুচরো ওষুধ বিক্রির দোকান রয়েছে। সেখানকার কর্ণধার রৈনক মুকিন বলেছেন, 'সরকার এখনও ভ্যাকসিন খোলা বাজারে বিক্রির অনুমতি দেয়নি। ফলে আমাদের পক্ষে ভ্যাকসিন বিক্রি করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আর অনেকেই পাইকারি এবং খুচরো হিসেবে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার নিয়ে যান।'
advertisement
২০১৮ সালে সীমান্তরক্ষী বাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন সোনারপুরের অরবিন্দ বৈদ্য। তার পর অন্য কোনও চাকরির খোঁজে ছিলেন। মাস পাঁচেক আগে একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে অরবিন্দ বাবুর ইন্টারভিউ নেন দেবাঞ্জন দেব। ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কাজে নিয়োগপত্র পান অরবিন্দ বৈদ্য। সাড়ে চার মাস আগে যোগ দেন ভুয়ো আইএএস অফিসারের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে। তাঁর দাবি, 'দেবাঞ্জন দেবের চালচলন কথাবার্তায় একবারের জন্যও মনে হয়নি যে তিনি এক জন ভুয়ো আইএএস অফিসার। এখন কসবা থানা আমাদের নবান্নের নাম করে যে নিয়োগপত্র দিয়েছিল তা দেখে জানিয়েছে, ওটা পুরোপুরি জালি কাজ।' তবে অফিসের কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করলেও তাঁদের মধ্যে বেশি মেলামেশা পছন্দ করত না দেবাঞ্জন। বহু নামি দামী জায়গায় অবাধ বিচরণ ছিল এই ভুয়ো আইএএস অফিসারের।
অরবিন্দ বাবু জানান, সব জায়গাতেই বিনা পয়সায় মাস্ক, স্যানিটাইজার, ব্লিচিং পাউডার-সহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস বিলি করছেন তাঁর স্যার। এইসব দেখেই নিজে উদ্যোগ নিয়ে চলতি মাসের ১৫ তারিখ সোনারপুর স্টেশন সংলগ্ন একটি অনুষ্ঠানে দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে যান। সেখানে দেবাঞ্জন উদ্যোক্তাদের ৫০০ কেজি ব্লিচিং পাউডার, ৩৫০০ মাস্ক, ৩০০০ স্যানিটাইজারের শিশি দেন বিনামূল্যে। সেইসব মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের শিশির গায়ে কলকাতা পুরসভার লোগো ব্যবহার করা হয়েছিল। অরবিন্দ বৈদ্য জানান, সব জায়গাতেই এই একই মাস্ক এবং স্যানিটাইজার বিলি করা হত। তবে নীল বাতি বিশ্ব বাংলার লোগো লাগানো গাড়িতে ঘুরে বেড়ালেও কোথাও কোনও খারাপ কাজ করতে দেখেননি তিনি। কিন্তু এখন সবকিছুই যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে প্রাক্তন এই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানের।
