বিদেশের পথে রওনা দেওয়া কুমোরটুলিতে তৈরি ‘সবথেকে বড়’ এই দুর্গা প্রতিমা (Durga Idol) উচ্চতায় প্রায় ১০ ফুট, চওড়ায় ২০ ফুট। কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীদের কথায়, শহর থেকে সাধারণত চার থেকে ছ’ফুট উচ্চতার প্রতিমাই বিদেশে যায়। কখনও সখনও আট ফুটের দুর্গাও গিয়েছে। কিন্তু ১০ ফুটের প্রতিমা সচরাচর বাক্সবন্দি হয়ে এতটা দূরের পথ যেতে দেখা যায় না। শিল্পী কৌশিক বসুর তৈরি ফাইবারের এই মাতৃমূর্তি রবিবার আমেরিকায় রওনা দিয়েছে। যাবে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো শহরে।
advertisement
প্রতিবছর মূলত প্রবাসীদের জন্যই প্রতিমা বানান কৌশিক। শিল্পী জানান, কোভিড (COVID-19) নিয়ম মেনে এই প্রতিমাকেও স্যানিটাইজ করে পাঠানো হচ্ছে বিদেশে। তিনি বলেন, “প্রতিবারই ইংল্যান্ড, দুবাই, ইটালি, সিঙ্গাপুর থেকে অর্ডার আসে। এবারও এসেছে। বেশ কয়েকটি চলেও গিয়েছে। তবে সবথেকে বড় দুর্গা প্রতিমা এটিই।” তাঁর তৈরি ফাইবারের সান ফ্রান্সিসকোগামী প্রতিমাটি দেখলে অবশ্য বোঝার উপায় নেই এই মা মৃন্ময়ী নন! মুখ জুড়ে লাবণ্যের ঢল। গায়ে গয়না, শাড়ি। মাথায় মুকুট। দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়ে অতি চেনা সেই ‘দশপ্রহরণধারিণী’।
কৌশিকবাবুর তৈরি প্রায় গোটা ১৫ প্রতিমা এবার বিদেশ যাচ্ছে। সান ফ্রান্সিসকোগামী ১০ ফুটের এই প্রতিমার দাম সাড়ে চার লক্ষ টাকা। শিল্পী জানান, এবার প্রতিমার দাম অন্যান্য বছরের থেকে একটু বেশি। কারণ এখন জাহাজে করে ভিনদেশে ঠাকুর পাঠাতে নানান সমস্যা হচ্ছে। বেড়েছে নানা নিয়ম। কোভিডবিধির কড়াকড়ি। কুমোরটুলির শিল্পীদের কথা অনুযায়ী, অন্যবারের মতো না হলেও রথের দিন বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজো কমিটি এসে ঠাকুরের বায়না করে গিয়েছে। শহরের বেশির ভাগ বনেদি বাড়ির পুজোরও অর্ডার চলে এসেছে। তবে এরইমধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে সহকারী শিল্পীরা। প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা, গ্রাম বাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে 'হেল্পিং হ্যান্ড'রা সাহায্য করতে আসেন পটুয়াপাড়ায়। কিন্তু এই বছর করোনার কারণে তাঁদের অনেকেই আর কলকাতা-মুখো হতে চাইছেন না। তাই কিছুটা হলেও চিন্তার মেঘ ঘনাচ্ছে কুমোরটুলির আকাশে।