শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের তরফে দাবি করা হয়েছে, সিআই এসএফ-এর আরও ১৫ জওয়ান ইচ্ছুক প্লাজমা দান করার জন্য। কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা সংস্থার যে ১৭ জন জওয়ান প্লাজমা দান করেছেন তাঁরাও বাকিদের বোঝাচ্ছেন প্লাজমা দানের উপকারিতা। লকডাউন অধ্যায়ে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ ছিল বন্দরের কাজ। আনলক অধ্যায়ে কাজ শুরু হয়েছিল। যদিও তার মধ্যে হলদিয়া ও কলকাতার কাজ শুরু হয়ে প্রথমেই থমকে যায়। কারণ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন এখানে কাজ করা কর্মীরা।
advertisement
ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্পের কাজ যাঁরা করেছিলেন তাঁদের অনেকেই আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ শুরু হলেও সেই কাজ থমকে যায়। আপাতত কাজ শুরু হয়েছে বন্দরের। সামাজিক দুরত্ব বিধি মেনেই কাজ করছেন তাঁরা। এরই মধ্যে যে যে কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।
প্লাজমা দান করা সিআইএসএফ-এর এক জওয়ান জানিয়েছেন, প্রথমে নিজের বাড়িতেই জানাননি যে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে ফিরেও আসেন কোম্পানির মেসে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি দেখেন অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকরা চাইছেন যেন সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা প্লাজমা দান করেন। তারপরেই প্লাজমা দান করা মনস্থির করেন ওই জওয়ান। ইতিমধ্যেই বন্দর হাসপাতালে তিনি প্লাজমা দান করেছেন।
ওই জওয়ানের কথায়, 'করোনাকে ভয় পেলে চলবে না। করোনাকে সাহস করে দূরে ঠেলে দিতে হবে। আমি যখন পেরেছি, বাকিরাও পারবে। তবে যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে আমার মতো। প্লাজমা দান করুক তাতে অনেক মানুষের উপকার হবে।' জওয়ানের এই কাজে খুশি তাঁর ইউনিট। সিআইএসএফ-এর কম্যান্ডান্ট জানিয়েছেন, 'আমরা কর্মীদের সমস্ত ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকি। আইসোলেশন সেন্টার আমাদের সব সুবিধা আছে। কর্মীদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সমস্ত নজর আমাদের আছে। এরই মধ্যে আমাদের সংস্থার কর্মীরা প্লাজমা দান করছেন এটা আমাদের ইউনিটের পক্ষেও দারুণ ব্যপার।'
প্রসঙ্গত এই প্রথম রাজ্যে কোনও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক জওয়ান একসঙ্গে প্লাজমা দান করলেন। বন্দরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, 'এটা দারুণ খবর যে চিকিৎসকদের ডাকে আমাদের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা প্লাজমা দান করছেন। এর ফলে আমাদের বাকি কর্মীরা যেমন উৎসাহিত হবেন, তেমনই এই মহামারির সময়ে আমরা বাকিদের কাজে আসতে পারব।'
বন্দর হাসপাতালের সিএমও মুকুন্দ কেলকার বলছেন, 'প্লাজমা দান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় চিকিৎসা মাধ্যমে। সেখানে জওয়ানরা নিজেরাই সুস্থ হয়ে এগিয়ে আসছেন মানে, তাঁরা মানসিক ভাবে আমাদের পাশে আছেন।'
ABIR GHOSAL