২৭ মে করোনা হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই ঘটনার ঘনঘটা মেডিক্যাল কলেজে। বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ বা অক্সিজেন না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে ২৬ বছরের যুবকের মৃত্যু অথবা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও ইছাপুরের ১৮ বছরের মেধাবী কিশোরকে ভর্তি করতে গিয়ে মায়ের আত্মহত্যার হুমকি।
সোমবার লকডাউনের দিনেও শান্ত থাকল না কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দুপুর দেড়'টা নাগাদ হঠাৎই জরুরি বিভাগের তিনতলার ২৪১ নম্বর বেড থেকে করোনা আক্রান্ত রোগী লক্ষ্মী চন্দ্র দিব্যি নেমে গেলেন। সন্দেহ হওয়ায় ২ নম্বর গেট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত পুলিশকর্মীরা এবং হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকান। ছুটে আসে জরুরি বিভাগের পিপিই পরিহিত কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। একপ্রকার প্রায় জোর করে করোনা আক্রান্ত লক্ষ্মী দেবীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
advertisement
কিছুক্ষণের বিরতি। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর বিকেল চারটে নাগাদ আবারও লক্ষী চন্দ্র নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে নিচে নেমে আসেন। উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা তাঁকে ওয়ার্ডে ফিরে যেতে বললে সে কি চিৎকার!
দমদম ইটলগাছার বাসিন্দা লক্ষ্মী চন্দ্রের দাবি, তিনি স্নায়ু রোগে আক্রান্ত। তাঁর করোনা হয়নি। মেডিক্যাল কলেজে তাঁর স্নায়ু রোগের কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। তাই তিনি বাড়ি ফিরে যেতে চান। এরপর পিপিই পরা স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে ওয়ার্ডে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলে চিৎকার জুড়ে দেন তিনি। রীতিমতো হম্বিতম্বি করে জানান, তাঁকে জোর করে হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে। কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। তাই তিনি দমদমে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে ফিরতে চান। পুলিশ, নিরাপত্তারক্ষী, স্বাস্থ্যকর্মীরা যতই বোঝায়, লক্ষ্মী চন্দ্রের একটাই বক্তব্য। তিনি কিছুতেই ওয়ার্ডে ফিরবেন না। টানা চল্লিশ মিনিট টানাপোড়েন চলে, তারপর বহু কষ্টে বুঝিয়ে তাঁকে আবার ওয়ার্ডে ফেরানো হয়।
ABHIJIT CHANDA