আদালতের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায় আই এম এ। তারা বলে, ‘‘রামদেবের অ্যালোপ্যাথি সংক্রান্ত মন্তব্য চিকিৎসকদের উপর প্রভাব ফেলছে। তিনি চিকিৎসকদের নাম বলছেন। তিনি বিজ্ঞানকে নকল বলে আখ্যা দিচ্ছেন। রামদেব মিথ্যা ভাবে কোভিডের ওষুধ হিসাবে ‘করোনিল’কে উপস্থাপন করছেন। এমনকি সরকারও তাঁকে বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে বলেছেন। যদিও এরই মধ্যে তিনি ২৫০ কোটি ডলার মূল্যের করোনিল বিক্রি করেছেন।’’
advertisement
জবাবে বিচারপতি বলেন, "আগামিকাল আমিও হোমিওপ্যাথি ভুয়ো মনে করতে পারি। এটি একটি মতামত। কী ভাবে এর বিরুদ্ধে মামলা করা যায়? আমরা যদি ধরে নিই যে তিনি যা বলছেন তা ভুল বা বিভ্রান্তিকর, তা হলেও মামলা করা যাবে না এই ভাবে। যদি পতঞ্জলি বিধি লঙ্ঘন করে, তবে এটা দেখা সরকারের কাজ। আপনারা কেন এই বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। এটা জনস্বার্থ মামলা। আপনারা আরও ভাল ভাবে একটি পিআইএল দায়ের করে বলুন যে রামদেব ‘করোনিল’কে নিরাময়কারী ওষুধ বলেছিলেন এবং তারপরে বলেছেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবর্ধক। এবং এরই মধ্যে করোনিল কয়েক লাখ লোক কিনেছে।’’
শুনানিতে আদালত আরও বলে, ‘‘রামদেব অ্যালোপ্যাথিতে বিশ্বাস করেন না। তিনি বিশ্বাস করেন যোগ ও আয়ুর্বেদ দ্বারা সবকিছু নিরাময় করা যায়। তিনি সঠিক বা ভুল হতে পারেন। তবে এই আদালত বলতে পারবে না করোনিল কোভিডের নিরাময় করতে পারে কি না। মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এটি করাতে হবে। তাঁর তির্যক মন্তব্য মামলা-মোকদ্দমার কারণ হতে পারে না।" এই প্রসঙ্গে আদালত বলে, অ্যালোপ্যাথি কারও কাজ করে, কারও করে না। এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি। তা ভ্রান্ত বলে মামলা করা যুক্তিযুক্ত নয়।’’
প্রসঙ্গত, গত মাসে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রামদেবের একটি মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়।পতঞ্জলির কর্নধার রামদেব জানিয়েছিলেন, অ্যালোপ্যাথি একটি নির্বোধ বিজ্ঞান।এই ধরনের মন্তব্যের পরই চিকিৎসক মহলে রামদেবের বিষয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফ থেকে কেন্দ্রের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়।রামদেবের বিরুদ্ধে যাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আর্জিও জানানো হয় চিকিৎসকের তরফে।এই ধরনের মন্তব্যকে ভালোভাবে নেয়নি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের তরফে রামদেবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।সেই চিঠিতে রামদেবের ওই মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।যদিও পাল্টা চিঠি দিয়ে অবশ্য রামদেব জানিয়েছেন, তিনি তাঁর ওই মন্তব্যকে ফিরিয়ে নিচ্ছেন, তবুও ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রামদেবের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে।