ভোর থেকেই ঘোষ দম্পতির বাড়িতে শুরু হয়ে যায় রান্না। ৩৬৫ দিন ১৮ ঘন্টা খোলা থাকে যে রান্নাঘর। কোভিড আক্রান্তদের সুষম খাদ্য খাওয়ার কথা জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেই মোতাবেক তৈরি হচ্ছে ভাত, ডাল, পাঁচ রকমের ভাজা, মরসুমি সবজির তরকারি, মাছের ঝোল, ডিমের ঝোল ও মাংসের রেসিপি৷ যিনি রান্না করছেন তিনি যেমন মাস্ক, হেয়ার কভার, গ্লভস ব্যবহার করছেন, তেমনই যারা ডেলিভারি বয় তাঁরা পিপিই কিট সঙ্গে রাখছেন। পিপিই সবসময় বাড়ি বাড়ি বা আবাসনে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই স্যানিটাইজার আবশ্যিক। আছে মাস্ক, হেড কভার, গ্লভস। সেইসব পড়ে ডিসপোজেবল কন্টেনার নিয়ে তারা কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি পৌছে যান। তবে কেউই ঘরে প্রবেশ করেন না। হয় দরজার সামনে রেখে আসেন। না হয় তারা ফোন করে, ডোর বেল বাজিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় খাবার রেখে আসছেন।
advertisement
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডেলিভারি বয় জানাচ্ছেন, 'প্রথমে সত্যি ভয় পেয়েছিলাম। কারণ সবাই বলছিল কাছাকাছি গেলে করোনা হয়ে যাবে। এখন অবশ্য আর তা হচ্ছে না। আমরা সমস্ত প্রটোকল মেনে, যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে খাবার দিয়ে আসছি। দেখেও ভাল লাগছে যে এই অসুস্থ মানুষগুলি এত কষ্ট, অসহায়তার মধ্যেও খাবারটা ঠিক সময়ে পাচ্ছেন। যারা এই খাবার পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তারা খুশি এই কাজ করতে পেরে। এই রান্নাঘর মুলত যার উদ্যোগে চলছে সেই শর্মিষ্ঠা ঘোষ বলছেন, "প্রতিদিন ফোন আসার পরিমাণ বেড়েই চলেছে৷ একাধিক বাড়ি থেকে ফোন আসছে যেখানে মাত্র দু'জন পরিবারে। করোনা আক্রান্ত হয়ে তারা খাবার খাবেন কি করে? সে কারণেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।" ইন্দ্রনীল ঘোষ জানাচ্ছেন, "আমরা এই কাজ করতে গিয়ে আমাদের সহযোদ্ধাদের সাবধান করেছি। তাদের কোভিড প্রটোকল মেনে চলতে বলা হয়েছে।"
ডিমভাত যারা নেবেন তাদের জন্যে খরচ পড়ছে ১১৫ টাকা, মাছ ভাতের জন্যে খরচ পড়ছে ১২০ টাকা, মাংস ভাতের জন্যে খরচ পড়বে ১৮০ টাকা। এমনকি যে কোনও অনলাইন ফুড অ্যাপ থেকে দোলার রান্নাঘরের খাবার মিলবে কোভিড আক্রান্তদের জন্যে।
ABIR GHOSHAL
