ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট দীর্ঘকাল ধরেই সবচেয়ে জনপ্রিয় বিনিয়োগমাধ্যম। নিরাপত্তা ছাড়াও, ব্যাঙ্কে টাকা রাখার একটি প্রধান কারণ হল, নিশ্চিত আয়। শুধু এই কারণে কি মিউচুয়াল ফান্ডের থেকে এফডি কে এগিয়ে রাখা যায়। না কি বেশি রিটার্নের জন্য ফিক্সড ডিপোজিটকে বলে বলে দশ গোল দিতে পারে মিউচুয়াল ফান্ড?
আরও পড়ুন: সোনা ও রুপোর দামে বদল, চেক করে নিন লেটেস্ট রেট...
advertisement
রিটার্ন: ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট থেকে নিশ্চিত রিটার্ন মিলবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। তাছাড়া কত রিটার্ন মিলতে পারে বিনিয়োগের সময়ই সেই সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বিভিন্ন মেয়াদের এফডি-র উপর বিভিন্ন হারে সুদ দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি কেউ নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্কের টাকা এফডি-তে ৩ মাসের জন্য রাখেন, তাহলে সুদের হার এক বছরের জন্য বিনিয়োগ করলে যা পাওয়া যায় তার কম হবে।
অন্য দিকে, মিউচুয়াল ফান্ডে নিশ্চিত রিটার্নের কোনও গ্যারান্টি নেই। এটা পুরোপুরি বাজারের উপর নির্ভরশীল। ফলে রিটার্নে কমবেশি হতেই পারে। তার মানে এই নয় যে রিটার্ন সবসময় খারাপই হবে। আদতে দীর্ঘমেয়াদে এফডি-র তুলনায় মিউচুয়াল ফান্ডে বড় রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা সবসময় বেশি। আর স্বল্পমেয়াদে বিনিয়োগ করতে চাইলে ডেট মিউচুয়াল ফান্ডও ভালো বিকল্প।
আরও পড়ুন: ফের আলোচনায় পুরনো পেনশন প্রকল্প, জেনে নিন কী কী সুবিধা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা!
লিকুইডিটি: নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এফডি হল ফিক্সড, যার অর্থ মেয়াদের আগে এই টাকা তোলা বা ভাঙানো যাবে না। তেমন করতে চাইলে জরিমানা দিতে হবে। অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ডে এই ঝামেলা নেই। ইচ্ছে করলে এক ক্লিকে ডিপোজিট তোলা বা ভাঙানো যায়। দু-তিন দিনের মধ্যে সেই টাকা বিনিয়োগকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জরিমানার বোঝাও নেই।
ঝুঁকি: এফডি-র এটাই প্লাস পয়েন্ট। ন্যূনতম ঝুঁকিও এতে নেই। মেয়াদ শেষে নিশ্চিত রিটার্ন মিলবেই। এমনকী ব্যাঙ্ক উঠে গেলেও বিমার ৫ লক্ষ টাকা মিলবে। অর্থাৎ যদি কারও ১০ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা থাকে আর তারপর কোনও কারণে ব্যাঙ্ক উঠে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারী ৫ লক্ষ টাকা ফেরত পাবেন। অন্যদিকে, মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকি সবসময় বেশি। নিশ্চিত রিটার্নের কোনও গ্যারান্টি নেই। এমনকী স্বল্প মেয়াদের ডেবট ফান্ডগুলিতেও ঝুঁকি থাকে। তবে বাজার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলে সহজেই ঝুঁকি এড়ানো যায়।
আরও পড়ুন: একবার ফুল ট্যাঙ্ক ভর্তি করলে ৬৫০ কিমি দৌড়বে এই নতুন গাড়ি
ট্যাক্স: বিনিয়োগকারীদের আয়করের স্ল্যাব অনুযায়ী এফডি রিটার্ন সম্পূর্ণ করযোগ্য। যদি কেউ আয়কর ব্র্যাকেটে ২০ শতাংশের নিচে থাকেন তাহলে তাঁর এফডি রিটার্নে ২০ শতাংশ হারে ট্যাক্স কাটা হবে। অবশ্য ট্যাক্স সেভিংস এফডি-ও আছে। সেগুলি ন্যূনতম ৫ বছর লক ইন পিরিয়ডে রাখতে হয়। আয়কর আইনের ৮০সি এর অধীনে তাতে কর ছাড় পাওয়া যায়। অন্য দিকে মিউচুয়াল ফান্ডের রিটার্ন থেকেও কর দিতে হয়। স্বল্পমেয়াদী লাভ, অর্থাৎ তিন বছরের কম সময়ের বিনিয়োগ থেকে আয়ে কর আরোপ করা হয় এবং বিনিয়োগকারীর বার্ষিক রিটার্নের সঙ্গে তা যোগ করা হয়।