এসআইপি-র উপর কীভাবে কর ধার্য করা হয়?
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, কোনও বিনিয়োগকারী এক বছরে ১২টি এসআইপি ইনস্টলমেন্ট করেছেন। এবার হয়তো তিনি সেই বিনিয়োগের একটা অংশ রিডিম করতে চাইছেন। এ-ক্ষেত্রে সেই বিনিয়োগকারীর প্রাথমিক এসআইপি সবার আগে রিডিম হবে।
আরও পড়ুন- আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স! উপসর্গ কী কী, কোন ওষুধে সারবে রোগ জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা
advertisement
এসআইপি-কে দীর্ঘ মেয়াদী মুনাফা অর্জনের হিসেবে বিবেচনা করার জন্য প্রতিটি এসআইপি-কে কমপক্ষে ১ বছর পূর্ণ করতে হবে। যদি এটি ইক্যুইটি হয়, তা-হলে দীর্ঘ মেয়াদে ১ লক্ষের উপর মুনাফা হলে ১০ শতাংশ কর ধার্য করা হবে। আর স্বল্প মেয়াদী লাভের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করা হয়।
যাঁরা এসআইপি-তে প্রথম বিনিয়োগ করছেন, তাঁদের জন্য সবথেকে ভালো পন্থা কী?
অনলাইনেও কোনও বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। তার জন্য তাঁকে প্রথমে মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থার ওয়েবসাইটে (যেটা বিনিয়োগকারী বাছাই করছেন তার উপর ভিত্তি করে) যেতে হবে। আর হাতের কাছে রাখতে হবে নিজের কেওয়াইসি নথিপত্র (KYC documents)।
আর যাঁরা অনলাইনে করাতে স্বচ্ছন্দ নন, তাঁরা অফলাইনেও করতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে সেই এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, যিনি বিনিয়োগকারীকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিতে সাহায্য করতে পারবেন।
এসআইপি-র জন্য অটো-ডেবিট বেছে নেওয়া যায়? আর যদি সেটা হয়, তা-হলে তা কীভাবেই বা করতে হবে?
বেশির ভাগ মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি এই বিষয়টির সুবিধা দিয়ে থাকে। যদি বিনিয়োগকারী নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা অটো-ডেবিট করাতে চান, তা-হলে তাঁকে ফান্ড হাউজের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে যাওয়ার পর ফান্ড সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর বাছাই করে নিতে হবে এবং কিছু জরুরি তথ্য শেয়ার করতে হবে। এই জরুরি তথ্যের মধ্যে অন্যতম হল এসআইপি-র মেয়াদ, এসআইপি-র কিস্তি ইত্যাদি।
আরও পড়ুন- ভোটে না জিতেই হয়েছিলেন মেয়র, আসানসোল উপনির্বাচনে এবার প্রার্থী বিধান উপাধ্যায়!
এ-বার বিনিয়োগকারীর বাছাই করা ফান্ড কোম্পানি তাঁর কাছে একটি ইউআরএন নম্বর (URN number) পাঠাবেন। সেটা নোট করে রাখতে হবে। এর পর নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে হবে বিনিয়োগকারীকে। সেখানে দিতে হবে ওই ইউআরএন নম্বরটি। এ-ভাবেই অটো-ডেবিট সেট-আপ সফল ভাবে সম্পন্ন করা যাবে।
অনেকেই পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে, এসআইপি কখনওই বন্ধ করা উচিত নয়। এর কি কোনও যুক্তি রয়েছে?
সে-ভাবে হয়তো না। তবে নিম্নোক্ত পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারী এসআইপি বন্ধ করার কথা বিবেচনা করতে পারেন:
বিনিয়োগকারীর যদি মনে হয় যে, তিনি ভুল ফান্ড বেছে নিয়েছেন এবং নিজের বিনিয়োগ নতুন ভাবে শুরু করতে চাইছেন, সে-ক্ষেত্রে তিনি এসআইপি বন্ধ করার কথা বিবেচনা করতেই পারেন।
ধরা যাক, বিনিয়োগকারী এমন একটি ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন, যা বেশ কিছু সময় ধরে ভালো ফল দিচ্ছে না। সে-ক্ষেত্রে চাইলে তিনি এসআইপি বন্ধ করে দিতে পারেন।
আবার কখনও হয়তো বিনিয়োগকারীর মনে হয় যে, তাঁর আর্থিক লক্ষ্য ইতিমধ্যেই পূরণ হয়ে গিয়েছে। তা-হলেও তিনি চাইলে নিজের এসআইপি বন্ধ করতে পারেন।
সে-রকম ভালো ফল দিচ্ছে না, এমন ফান্ড কীভাবে চেনা যাবে?
এটা খুবই সহজ এবং সাধারণ একটি বিষয়। বেছে নেওয়া ফান্ডটি বিগত ৫ অথবা ১০ বছরে কেমন রিটার্ন দিয়েছে, সেই বিষয়টা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে। যদি দেখা যায়, ভালো রিটার্ন আনতে পারেনি, তা-হলে বুঝতে হবে যে ফান্ডটির পারফরমেন্স তেমন ভালো নয়। যদিও এসআইপি ভীষণই নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম। বিনিয়োগকারী যদি ভুল ফান্ড বেছে নেন, তা-হলে সেগুলি কার্যকর হবে না।
এসআইপি-র প্রধান উপকারিতা:
বিনিয়োগের অন্যান্য মাধ্যমের তুলনায় এসআইপি বেশ ভালো ফল এবং উপকারিতা দিয়ে থাকে বিনিয়োগকারীদের। এর মধ্যে অন্যতম হল:
কস্ট অ্যাভারেজিং – এর অর্থ হল, নিম্মগামী বাজার পরিস্থিতিতে বেশি করে ইউনিট কেনা এবং উচ্চগামী বাজার পরিস্থিতিতে কম পরিমাণ ইউনিট কেনা।
ঝুঁকি কম – স্টক মার্কেটে সরাসরি অংশগ্রহণকারী হিসেবে এসআইপি তুলনামূলক ভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ।
সঞ্চয়ের অভ্যেস – এসআইপি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অর্থ সঞ্চয়ের অভ্যেস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। যা কারওর আর্থিক অবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পূর্ব-নির্ধারিত বিষয় – বিনিয়োগকারী নিজেই কোথায় বিনিয়োগ করবেন বা বিনিয়োগের স্কিম এবং পরিমাণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।