বিকল্প শক্তিতে জোর: বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে বিকল্প শক্তির ব্যবহার করা ছাড়া অন্য উপায় নেই। কয়লা, খনিজ তেলের ব্যবহার কমাতে হবে। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তির মতো অফুরান প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার, শক্তির পুনর্নবীকরণের মতো বিষয়গুলিতে বাড়তি জোর দিতে হবে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি, পরমাণু শক্তি, জীবাশ্ম জ্বালানি ইত্যাদি ব্যবহার করা ও সংগ্রহ করে রাখাতেও নজর দিতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: করোনায় ‘বহি খাতা’ বাদ, হচ্ছে না হালুয়া সেরিমনি, এবারও ‘পেপারলেস’ বাজেট নির্মলার
গ্রিন মেটেরিয়াল ব্যবহার বাধ্যতামূলক: যে ভাবে দ্রুত হারে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে, তা থেকে বাঁচতে আমাদের কিছু পদ্ধতি বদলাতেই হবে। তাই যে কোনও নতুন নির্মাণে ‘গ্রিন’ উপকরণে জোর দিতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
গবেষণায় অনুদান বাড়ানো: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং শিল্পে সরাসরি জ্বালানি দক্ষতা, ক্লিন এনার্জি ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রের তরফে গবেষণা অনুদান বৃদ্ধি করা হোক। বায়োটেকনোলজি বিভাগে এটা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে। যদিও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এখনও আমলাতান্ত্রিক। তবে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পদক্ষেপ করা জরুরি।
পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং ক্রীড়া বিভাগকে মিলিয়ে দেওয়া হোক: পরিবেশ মন্ত্রক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রককে মিলিয়ে একটাই মন্ত্রক করা হোক। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটা জরুরি। কারণ, খেলাধুলা এবং উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ। দীর্ঘমেয়াদে দেশের স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কমাতে পরিবেশ এবং শারীরিক কার্যকলাপের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি পেলে তবেই সুস্থ থাকা যায়। তাই এগুলিকে এক জায়গায় আনতে হবে। প্রতিরক্ষা বা বিদেশ মন্ত্রকের মতো এই মন্ত্রকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
বৈদ্যুতিক যানবাহনে জোর: বৈদ্যুতিন যানবাহনই ভবিষ্যৎ। ভর্তুকিযুক্ত পরিবহন ব্যবস্থায় খরচ কমিয়ে বৈদ্যুতিন যানবাহনকে গণপরিবহনের মাধ্যম করে তুলতে হবে। প্রয়োজনে প্রেট্রোল ডিজেল গাড়ির উপর উচ্চ হারে কর বসিয়ে বৈদ্যুতিন যানবাহনে ট্যাক্স মকুব করতে হবে। আরও ভালো হয় যদি ১০ বছরের পুরনো সমস্ত পেট্রোল ডিজেল চালিত বাস বাতিল করার মতো সাহস সরকার দেখাতে পারে। রাজ্যগুলিকে বৈদ্যুতিন বাহনে উৎসাহ দিতে হবে।
সাইকেল লেন, ফুটপাথ: সুস্থ জীবনযাত্রার জন্য পরিকাঠামো খাতে ব্যয় বাড়াতেই হবে। সমস্ত শহরে সাইকেলের জন্য পৃথক লেন এবং হাঁটার জন্য ফুটপাথ রাখা জরুরি। এতে একসঙ্গে দুটো কাজ হবে। প্রথমত, দূষণ কমবে। দ্বিতীয়ত, শারীরিক ব্যায়াম হবে। আর জন স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য খাতে রাজ্যগুলির ব্যয়ও কমবে। করোনা মহামারী থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী মহামারীর জন্য প্রস্তুত হওয়ার এটাই সময়।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিক ও ক্ষুদ্র শিল্পকে বাঁচাতে বিশেষ প্যাকেজ দিক কেন্দ্র, নির্মলাকে বার্তা বিশেষজ্ঞদের!
কৃষিক্ষেত্রে কোল্ড চেইন: খাদ্যের অপচয় রুখতে কোল্ড চেন নীতি প্রণয়ন জরুরি। এতে কৃষকদের আয়ও বাড়বে। শুধু তাই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিপুল সম্ভাবনাও আছে।
কুলিং অ্যাপ্লায়েন্স এনার্জি: প্রচণ্ড গরমে ঠান্ডার জন্য এসি-র ব্যবহার কমিয়ে কুলিং অ্যাপ্লায়েন্স এনার্জির প্রয়োগ বাড়াতে হবে। এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমবে।
রেলের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবের সঙ্গে বন্দরের যোগাযোগ: প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি শিল্প কেন্দ্রকে রেলের মাধ্যমে সরাসরি বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করা উচিত। এতে পরিবহন খরচ বাঁচবে। পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা বাড়বে। সঙ্গে বাঁচবে পরিবেশ।
বিশেষ পাঠক্রম: আইটিআইগুলিতে অপ্রচলিত শক্তি সম্পর্কিত বিশেষ পাঠক্রম চালু করতে হবে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইলে শিক্ষিত জনশক্তির প্রয়োজন। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতকে কার্বন শূন্য করার ঘোষণা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে যদি এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে হয়, তাহলে সময় নষ্ট করা যাবে না। পরিবেশ, শক্তি এবং জলকেই বাজেটের মূল ভিত্তি করতে হবে। আগামী ৫০ বছরের জন্য এটাই দেশের কাছে চ্যালেঞ্জ।