জেলা কোচবিহারের এক ফুল চাষি দুলাল সরকার জানান, শীতের মরসুমের শুরু থেকেই চন্দ্রমল্লিকা বাজারে আসতে শুরু করে। তাই ধীরে ধীরে এই ফুল চাহিদা বাড়তে শুরু করে বাজারে। কিন্তু এই ফুল ফোটাতে কৃষকদের এই গাছের প্রতি যত্ন নিতে হবে অনেকটাই। রোগ প্রতিকার করতে হবে এবং করতে হবে গাছের পরিচর্যা। তবে যে কোনও কৃষক এই গাছের চাষ করে অনেক টাকা রোজগার করতে পারবেন। এই চাষ করলে খরচের চাইতে লাভের পরিমাণ অনেকটাই বেশি।
advertisement
আরও পড়ুন: উত্তর সিকিমে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাঙালি পর্যটক মা ও মেয়ের! পরিবারে হাহাকার
গাছের রোগের বিশেষজ্ঞ দুলাল সরকার জানান, এই গাছের একটি রোগ হল পাতাধসা বা পাতাপচা রোগ। এটি একটি ছত্রাক ঘটিত রোগ যা Septoria sp. নামক ছত্রাকের জন্য হয়। বাড়ন্ত গাছের নিচের দিকের পুরনো পাতায় প্রথমে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। পাতার কিনারা থেকে ছোট ছোট গোলাকৃতির বাদামি দাগ শুরু হয়। অসময়ে বৃষ্টিপাত হলে এই রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। ফুল ফোটার সময় এই ছত্রাকের আক্রমণ হলে ফুলের কুঁড়ির বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং পচে যায়।
দুলাল সরকার আরও বলেন, “এই গাছের আরও একটি রোগ হল ছত্রাকঘটিত রোগ যা Erysiphe chrysanthemi নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। গাছের পুরনো পাতায় এই রোগের আক্রমণ বেশি পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়। এই রোগে গাছের পাতা ধূসর হয়ে যায়। এতে রোগাক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং কুঁচকে যায়। ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ফুল উৎপাদনও হ্রাস পায়।
আরও পড়ুন: বাঘবন্দি খেলা শেষ! ৭ দিন পর চতুর্থ বারের ঘুমপাড়ানি গুলিতে বাগে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার
পাশাপাশি চন্দ্রমল্লিকার আরও একটি মারাত্মক রোগ হয় গ্রে মোল্ড। এটি Botrytis cinerea নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। এখন প্রায় সব জায়গায় এই রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এই রোগের আক্রমণে ফুলের পাপড়ি, পাতা এমনকি কাণ্ডেও বাদামি জলে ভেজা দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছে ধূসর থেকে বাদামি পাউডারের মত আস্তরণ পড়ে। গ্রে মোল্ড রোগ হলে ফুলের পাপড়ির মাঝের অংশের থেকেই বাদামি দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে ফুল পচে যায়।
ফুল চাষের এই রোগ গুলির আক্রমন ঠেকাতে পারলেই ফুল চাষে অনেকটাই লাভ করা সম্ভব। নাহলে ফুল চাষ থেকে লাভের বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এই চাষে আগ্রহী কৃষকদের উচিত চাষ শুরুর আগে কৃষি দফতরের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া।