" যদিও অ্যালো ভেরা চাষ একটি ভাল আইডিয়া হলেও, অজয়ের কাছে তা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব ছিল৷ চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে পড়া শেষ করার পর তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট ছেলেটিকে তার পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। এর জন্য তিনি ১৯৯৯ সালে প্রতি কাপ ১০ টাকায় চা বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, "ব্যবসাটি অত্যন্ত লাভজনক ছিল।" কিন্তু অজয় জানতেন যে, তিনি যদি আরও ভাল জীবন চান, তাহলে তাঁকে আরও উচ্চ লক্ষ্য রাখতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: আমাদের দেশ থেকে কি আয়কর ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যেতে পারে? কী জবাব দিল সরকার?
এরপর অজয় কাগজে অ্যালো ভেরার গল্প পড়ে নিজেও তা চাষ শুরু করার কথা ভাবেন। যদিও তিনি দাবি করেন যে, চায়ের ব্যবসা থেকে প্রচুর আয় হয়। কিন্তু তিনি তা সত্বেও অ্যালোভেরার চাষ শুরু করেন। অজয় অ্যালো ভেরা সম্পর্কে কৃষকদের সঙ্গে গবেষণা এবং কথা বলা শুরু করেন। এরপর তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে, অ্যালো ভেরা বড় করার জন্য খুব বেশি জলের প্রয়োজন হয় না। বীজ বা চারা সমেত চাষ কোথা থেকে শুরু করতে হবে, সেই সম্পর্কে অজয় অনিশ্চিত ছিলেন। যদিও গাছটি কীভাবে বড় করা যায়, সেই সম্পর্কে তাঁর প্রয়োজনীয় সমস্ত জ্ঞান ছিল।
আরও পড়ুন: গ্রাহকদের সুবিধার্থে হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা চালু করল এলআইসি! মিলবে ১১টি সুবিধা!
লোকেরা অজয়কে কাছের চুরু গ্রামের একটি কবরস্থানের কথা জানায়, যেখানে এই গাছের বেশ কয়েকটি চারা ছিল, যখন তিনি প্রথম সেই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেছিলেন। "সেই গ্রামের এক ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার পর, কেউ সেখানে একটি অ্যালো ভেরার চারা রোপণ করেছিলেন। আরও মানুষ চারাটি বড় করতে শুরু করলে অ্যালো ভেরা ছড়িয়ে পড়ে।" জনতা সেই গাছটি অপসারণ এবং কবরস্থান পরিষ্কার করার কাজ শুরু করতে চায়, কারণ সেটি বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয়। অজয় সেই কথা শুনে, তাঁর গ্রামের প্রতিবেশীদের একটি ছোট দল, একটি ট্রাক্টর এবং ট্রলি ব্যবহার করে কবরস্থান থেকে অ্যালো ভেরা গাছগুলিকে তাঁর ক্ষেতে নিয়ে যান। যেখানে তিনি সেগুলো প্রতিস্থাপন করেছিলেন।
এর পর তিনি সেই অ্যালো ভেরা গাছের জন্য উচ্চ মানের সার এবং মাটি ব্যবহার করেছেন। অ্যালো ভেরার যত্ন নেওয়ার বিষয়ে তিনি অনলাইনে অনেক গবেষণা করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, "আমি নিশ্চিত করেছি যে গাছগুলি পর্যাপ্ত রোদ পেয়েছে এবং পাতাগুলি মাটির উপরে রয়েছে।" যেহেতু এটি ছিল অজয়ের চাষের প্রথম প্রচেষ্টা, তাই তাঁর উচ্চ প্রত্যাশা ছিল না। পাশাপাশি, তিনি তাঁর চায়ের দোকানও পরিচালনা করতেন। তিনি তাঁর চায়ের দোকান থেকে সঞ্চয় করা অর্থ ব্যবহার করেছেন অ্যালো ভেরা চাষের জন্য। দেড় বছর পরে তিনি অবাক হয়েছিলেন। কারন অজয়ের ধারণা ছিল না যে, গাছ এতটা আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে উঠবে।
২০০২ সালে, তিনি তাঁর চায়ের দোকান বন্ধ করে দেন, তাঁর অ্যালো ভেরা চাষের সাফল্যের কারনে। কিন্তু অজয়ের মতে, তিনি অ্যালো ভেরা রোপণ এবং চাষ করার সময়ও গাছটি কী ভাবে বিক্রি হবে তা নিয়ে ক্রমাগত উদ্বিগ্ন ছিলেন। ফলে তাঁকে ফসলের জন্য ক্রেতাদের সন্ধান করতে হয়। আর এখন সেই অ্যালো ভেরা বিক্রি করেই তিনি লাখ টাকা উপার্জন করছেন।