ভোপাল: আমরা সাধারণত বিভিন্ন জায়গায় পুরি-সবজি খেয়ে থাকি। কিন্তু আজ আমরা এমন এক জায়গার পুরি-সবজির কথা বলব, যার স্বাদ সারা জীবন মুখে লেগে থাকবে। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের চক বাজার এলাকায় অবস্থিত আগরওয়াল পুরি ভাণ্ডার। বিগত ৭৩ বছর ধরে মানুষের রসনাতৃপ্তির দায়িত্ব পালন করে আসছে এই ভাণ্ডার। এমনকী, আজকের দিনে দাঁড়িয়েও দূরদূরান্ত থেকে এখানকার পুরি-সবজির অতুলনীয় স্বাদ উপভোগ করতে আসেন মানুষ।
advertisement
আগরওয়াল পুরি ভাণ্ডারের বর্তমান মালিক প্রদীপ আগরওয়াল Local 18-এর কাছে বলেন যে, “সেই ১৯৫২ সালে আমার প্রয়াত বাবা শ্রী রাম আগরওয়াল এই দোকানটি চালু করেছিলেন। প্রায় ৭৩ বছর পূর্ণ করেছে দোকানটি। এমনকী আজও এখানকার পুরি-সবজি চেখে দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন পুরনো গ্রাহকরাও।” প্রদীপ আগরওয়াল আরও বলেন যে, “আগে একটা ছোটখাটো শহর ছিল ভোপাল। ফলে এখানকার জনসংখ্যাও ছিল কম। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের বাবা এখানে একটি জায়গা ভাড়া নিয়ে একটি দোকান খুলেছিলেন।”
প্রদীপ বলেন যে, “আজ এখানে যে দোকানটি রয়েছে, সেটাই আমার বাবা এক সময় ভাড়া করেছিলেন। ১০ x ১২ মাপের ছোট্ট একচিলতে দোকানে সবজি এবং পুরি বানিয়ে তা বিক্রি করতেন। সেই সময় সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এখানকার জুমেরাতি গেটটি বন্ধ হয়ে যেত। এই পরিস্থিতিতে এখানে তার আগেই পুরি-সবজি খেতে ভিড় জমাতেন গ্রাহকরা। ধীরে ধীরে সেই পুরি-সবজির স্বাদের খ্যাতি এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে, অনেকে তো এখানকার রোজকার গ্রাহক হয়ে উঠেছিলেন।”
১৫ পয়সা থেকে ৬০ টাকার সফর:
১৯৫২ সালে চালু হয়েছিল দোকানটি। সেই সময় ৫টি পুরি আর আলুর তরকারির দাম ছিল মাত্র ১০ থেকে ১৫ আনা। পুরনো গ্রাহকরা বলেন যে, প্রদীপ আগরওয়ালের বাবা নিজেই পুরি-সবজি বানাতেন। আর স্বাদ কেমন হয়েছে, তা জানার জন্য অন্যদেরকে নিজের রান্না করা খাবার দিতেন। তবে আজ আরও ফুলেফেঁপে উঠেছে দোকান। নতুন সংযোজনও হয়েছে খাদ্যতালিকায়। ফলে বর্তমানে এক প্লেট পুরির সঙ্গে আলুর তরকারি, রায়তা, আচার, পাঁপড়, গুলাব জামুন এবং দই বড়াও পরিবেশন করা হয়।
তৃতীয় প্রজন্মের হাতে ব্যবসার হাল:
প্রদীপ আগরওয়াল বলেন যে, এই দোকানের পুরি-সবজি খেতে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁরা বেশ কষ্ট করেই আসেন এখানে। নিজেদের গাড়ি চক বাজারে পার্ক করে রেখে পায়ে হেঁটে দোকানে পৌঁছন। তিনি আরও বলেন, “রান্নাবান্নায় যেসব মশলা ব্যবহার করা হয়, সেগুলি নিজেরাই গুঁড়ো করে তৈরি করে নিই আমরা। এটা আমাদের তৃতীয় প্রজন্ম, বর্তমানে তাঁরাই দোকানটি চালাচ্ছেন। আসলে আমার দুই পুত্র আয়ুষ এবং আমন আগরওয়াল এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের নতুন একটি দোকান খোলা হয়েছে এই শহরেরই এমপি নগর এলাকায়। নাম রাজভোগ।”