অর্থাৎ বিনিয়োগকারী কীকারণে বিনিয়োগ করছেন সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কোথায় বিনিয়োগ করবেন, কতটা বিনিয়োগ করবেন এবং সেই বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী কী পেতে চান, সে সম্পর্কে পরিকল্পনা ছকে তবেই বিনিয়োগ-জার্নি শুরু করা উচিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ উদ্দেশ্য স্পষ্ট থাকলে তবেই আর্থিক পরিকল্পনায় স্বচ্ছতা আসবে। কীভাবে স্মার্ট আর্থিক লক্ষ্য ঠিক করা উচিত, সেই নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল।
advertisement
আরও পড়ুন-স্বাস্থ্য বিমা নিয়েছেন? জানুন কোম্পানি কোন কোন চিকিৎসার খরচ বহন করবে না
নির্দিষ্ট পরিকল্পনা: কী উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ, সে সম্পর্কে বিনিয়োগকারীর মনে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনও বিনিয়োগকারী বললেন, বাড়ি কেনার জন্য তিনি টাকা জমাতে চান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিনিয়োগকারীর স্বচ্ছ ধারণা নেই। এখন তিনি যদি বলতেন, মুম্বই শহরতলির গেটেড কমিউনিটিতে ওয়ান বেডরুম হল কিচেন ফ্ল্যাটের জন্য ডাউন পেমেন্টের ব্যবস্থা করতে চান, তাহলে সেটা অর্থবহ হত। লক্ষ্য নির্দিষ্ট হলে তার সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে যায়। ফলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে মানুষ কঠোর পরিশ্রম করতে পিছপা হয় না। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
পরিমাপযোগ্য: নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তো হল, এবার তার সঙ্গে অর্থমূল্য যোগ করাটা জরুরী। তাহলে বিনিয়োগকারী কী চান, সেটা আরও স্পষ্ট হবে। আগের উদাহরণের প্রসঙ্গ টেনে বিনিয়োগকারী বলতে পারেন, তিনি ৭০ লক্ষ টাকা মূল্যের বাড়ি কিনবেন। তাই ডাউন পেমেন্টের জন্য দামের ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে চান। তবে মাথায় রাখতে হবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ে। তাই আর্থিক পরিকল্পনার মধ্যে সেটাকেও ধরতে হবে।
আরও পড়ুন-নির্দিষ্ট এই অভিমুখ মেনে খেতে বসলে শরীর থাকবে সুস্থ, আর মিলবে দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদও!
অর্জনযোগ্য: এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বচ্ছ ধারণা থাকল এবং সেই অনুযায়ী আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ করাও হল। কিন্তু সেই লক্ষ্য তো অর্জন করতে হবে। অনেক সময়ই নির্দিষ্ট আর্থিক লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সময়কে কাজে লাগাতে চান। ৫ বছরের বদলে ৭ বছর ধরে বিনিয়োগ করেন। যেমন, উপরের উদাহরণটাই ধরা যাক। একজন ব্যক্তি যদি মাসিক ১ লাখ টাকা উপার্জন করেন এবং প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে এক বছরের মধ্যে ফ্ল্যাটের ডাউন পেমেন্ট করতে চান, তাহলে তা অসম্ভব বলে মনে হবে। কিন্তু তিনি যদি একটু বেশি সময় নেন, তাহলেই সেটা অর্জন করা সহজ হয়ে যাবে।
বাস্তবসম্মত: আর্থিক লক্ষ্য বাস্তবসম্মত হতে হবে। যদি কেউ মাসিক ১ লক্ষ টাকা বেতনে দক্ষিণ মুম্বইয়ের বিলাসবহুল এলাকায় প্রাসাদ বানাতে চান তাহলে সেটা দিবাস্বপ্ন দেখার মতোই ব্যাপার হবে। একমাত্র কিছু অলৌকিক ঘটনাই এই ধরনের পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে পারে।
সময়: প্রতিটি আর্থিক লক্ষ্যই সময়ের প্রেক্ষাপটে হওয়া জরুরী। তার সঙ্গে যুক্ত হয় মূল্য। কিন্তু মাথায় রাখতে হয় মুদ্রাস্ফীতিও। আগের উদাহরণ দিয়েই ব্যাপারটা বোঝা যাক। যদি ৫ শতাংশ মূদ্রাস্ফীতিও ধরা হয় তাহলে একই বাড়ি পাঁচ বছর পর ৮৯.৩৪ লক্ষ টাকা এবং সাত বছর পর তার ৯৮.৫ লক্ষ টাকা দাম হবে। ফলে ডাউন পেমেন্টের পরিমাণও বাড়বে। তাই যে সময়ের মধ্যে যে আর্থিক লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে তা অর্জন করা জরুরি।