গাড়ি এবং অটো যন্ত্রাংশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে। টেলিযোগাযোগ, ওষুধ, কৃষি, সেমি কন্ডাক্টর চিপের মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং কাঠ রপ্তানিও বন্ধ করেছে রাশিয়া। একটি বিবৃতি জারি করে রাশিয়া জানিয়েছে, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণকারী দেশগুলিতে এই সমস্ত পণ্য রপ্তানি স্থগিত করা হচ্ছে’।
রাশিয়ার অর্থমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে সমস্ত দেশ আঙুল তুলছে তাদের জন্য এটা খুবই যুক্তিযুক্ত প্রতিক্রিয়া। অর্থনীতির মূল খাতগুলির নিরবচ্ছিন্ন কার্যকারিতা নিশ্চিত করার এর মূল লক্ষ্য’। রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া পশ্চিমি কোম্পানিগুলির মালিকানাধীন সমস্ত সম্পদ জাতীয়করণের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল মস্কো। তারপরই এই পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: রণভূমি ইউক্রেন ছেড়ে পড়শি দেশে একাই পাড়ি দিয়ে নজর কাড়া সেই বালকের পরিণতি কী হল?
ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই রাশিয়াতে ব্যবসা বন্ধের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোন্ডা, টয়োটা, ভক্সওয়াগন, জেনারেল মোটরস, মার্সেডিজ, ফোর্ড এবং বিএমডব্লিউ-র মতো বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা সংস্থা। উৎপাদন এবং রপ্তানি দুই স্থগিত রেখেছে তারা। যার ফলে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) সরকার। কিন্তু প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে এই ব্যবসা বন্ধের প্রভাব আঁচ করবে পশ্চিমের দেশগুলি সেই সম্ভাবনাও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাগজ কেনার টাকা নেই, তাই পরীক্ষা বন্ধ! ঘোষণা করে দিল সরকার
জিপ, ফিয়াট এবং পিউজিটের মতো ব্র্যান্ডের মালিক স্টেলান্টিসও এই তালিকায় যোগ দিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে যে তারা রাশিয়ায় গাড়ি আমদানি ও রপ্তানি স্থগিত করছে। রাশিয়ার কালুগায় মিতসুবিশির সঙ্গে যৌথভাবে স্টেলান্টিসের একটি উৎপাদন কারখানা রয়েছে। হুন্ডাই, রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বিদেশি গাড়ি নির্মাতা সংস্থা। সম্প্রতি তারা ঘোষণা করেছে যে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে স্থগিত রাখার পরে পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে চায় তারা। কিন্তু গাড়ি এবং অটো যন্ত্রাংশ রপ্তানির উপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে, হুন্ডাইয়ের পক্ষে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করা কঠিন হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ১৬ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তবুও দুই তরফে যুদ্ধবিরতির কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়। তবে সেই বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। ইতিমধ্যে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। মস্কো থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বেশ কয়েকটি বহুজাতিক সংস্থা। এবার তার পাল্টা রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল রাশিয়া।