আরও পড়ুন: কোন কোন রাজ্যে অনলাইনে দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা যায়?
সম্পত্তির অর্থনৈতিক এবং আইনি দায় কী?
অনেক সময়ই দেখা যায় যে, ক্রেতারা বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং ভুয়ো নথির জালে পড়ে বৈধ ভাবে ক্রয়যোগ্য নয়, এমন সম্পত্তি কিনে বসে থাকেন। কখন একটি সম্পত্তি ক্রয়যোগ্য নয়? যখন কোনও সম্পত্তিকে বন্ধক রাখা হয় বা বন্ধক হিসেবে জমা রেখে ঋণ নেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে ঋণদাতা সম্পত্তির উপর ‘লিয়েন’ বা এক ধরনের চার্জ ধার্য করে। এই চার্জ বসানোর অর্থ হল, যত ক্ষণ না-ঋণগ্রহীতা/মালিক বন্ধকীর সমস্ত টাকা পরিশোধ করছেন, তত ক্ষণ সেই সম্পত্তি অন্য কাউকে বিক্রি করা যাবে না। অর্থাৎ, সম্পত্তিটি বিক্রয়ের এবং ক্রয়ের অযোগ্য হয়ে যায়। এই কারণে কোনও সম্পত্তি কেনার আগে যাচাই করে নেওয়া উচিতি সম্পত্তিটি ক্রয়ের জন্য আইনি ভাবে বৈধ কি না।
advertisement
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর! হোলিতে ১০০০০ টাকা উপহার দেবে সরকার !
একটি সম্পত্তির আইনি দায়বদ্ধতা রয়েছে কিনা, তা কী ভাবে বোঝা যাবে?
এই প্রশ্নের একমাত্র উত্তর হল-- দায়বদ্ধতা শংসাপত্র। দায়বদ্ধতা শংসাপত্র হল, এমন একটি সরকারি নথি, যার সাহায্যে যে কোনও সম্পত্তির অর্থনৈতিক এবং আইনি জটিলতা সম্বন্ধে জানা যায়। এটি রাজ্য সরকারের ভূমি দফতরের তরফে জারি করা হয়। উপভোক্তার আবেদনের উপর ভিত্তি করে এই শংসাপত্র প্রদান করা হয়। আবেদনের সময় ফর্মে উল্লেখ করে দিতে হয় যে, কত বছর থেকে কত বছরের মধ্যেকার সময়সীমার জন্য দায়বদ্ধতা শংসাপত্র প্রয়োজন। ক্রেতার সুবিধার্থে সময়সীমা উল্লেখ্য করে দিতে বলা হয়, যাতে কম সময়ের মধ্যে তথ্য খুঁজে উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়। আবেদনের সময় ফি হিসেবে সরকার নির্ধারিত কিছু পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হয়। ফর্মে উল্লেখিত সময়সীমা কম হলে কম টাকা লাগে এবং বেশি হলে স্বাভাবিক ভাবেই টাকার অঙ্কটা বেড়ে যায়।
দুই রকম প্রক্রিয়ায় দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের আবেদন করা যায়-- অনলাইন এবং অফালাইন। শুধুমাত্র কয়েকটি রাজ্যে অনলাইনে শংসাপত্রের আবেদনের পরিষেবা রয়েছে। অনলাইন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত হয় এবং ২-৩ দিনের মধ্যে শংসাপত্র পাওয়া যায়।
দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রাজ্য ছাড়া বেশির ভাগ রাজ্যেই এখনও অফলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই শংসাপত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে আবেদন করে এই নথি সংগ্রহ করতে হয়।
আরও পড়ুন: এপ্রিল থেকে দ্বিগুণ হতে পারে রান্নার গ্যাসের দাম!
কী ভাবে অফলাইনে আবেদন করবেন?
- যেখানে সম্পত্তির অবস্থান রয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যেতে হবে।
- একটি ফর্ম ২২ সংগ্রহ করে যথাযথ ভাবে তাতে দেওয়া সমস্ত তথ্য পূরণ করতে হবে।
- ফর্মে প্রথমে উল্লেখ করতে হবে যে, দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা হচ্ছে। এর পর বিক্রেতার নাম, সম্পত্তির অবস্থান-সহ অন্যান্য তথ্য এবং কত বছরের সময়সীমার জন্য শংসাপত্র প্রয়োজন, তা স্পষ্ট ভাবে লিখতে হবে।
- নির্দিষ্ট কাউন্টারে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
- আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর একটি রেফারেন্স নম্বর দেওয়া হবে। এই নম্বর ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদনের স্ট্যাটাস দেখা যাবে।
অনলাইনে দায়বদ্ধতা শংসাপত্র আবেদনের স্ট্যাটাস কী ভাবে দেখা যায়?
শংসাপত্র আবেদনের স্টেটাস ট্র্যাক করার পদ্ধতি বিভিন্ন রাজ্যের ওয়েবসাইটের জন্য ভিন্ন হয়। সব রাজ্যে অনলাইন আবেদনের সুবিধা না-থাকলেও বেশির ভাগ রাজ্যের ভূমি দফতরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে অফলাইন আবেদনের স্ট্যাটাস দেখার সুবিধা রয়েছে। ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় রেফারেন্স নম্বর দিলেই জানা যায় যে, আবেদনটি অনুমোদিত হয়েছে কি না। যদি ওয়েবসাইটে দেখায় দায়বদ্ধতা শংসাপত্র জারি করা হয়ে গিয়েছে, তখন রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে নথিটি সংগ্রহ করতে হবে।
অফলাইন আবেদনে কত দিনে শংসাপত্র হাতে পাওয়া যায়?
একটি অফলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে একটু বেশি সময় লাগে। ফর্ম ২২ জমা দিয়ে আসার ১৫-৩০ দিন পর দায়বদ্ধতা শংসাপত্র নথিটি আবেদনকারীর হাতে আসে।
দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের অফলাইন আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি:
- সম্পত্তির বিবরণ এবং মূল দলিল
- সম্পত্তি বিক্রয় দলিল / উপহার দলিল / পার্টিশন দলিল / মুক্তির দলিল (যদি আগের কোনও দলিল থাকে)
- আবেদনকারীর স্বাক্ষর-সহ দলিল নাম্বার
- সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশনের কাগজ
- আবেদনকারীর ঠিকানার প্রমাণপত্র