তাই সামনে তাকাতে হবে। তবে শিক্ষা নিতে হবে ফেলে আসা দিনগুলো থেকেও। করোনা অতিমারী ধাক্কা দেওয়ার আগে অর্থনীতি সংকোচনের মুখে পড়েছিল দেশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যাকে বলেছিল, ‘ঐতিহাসিক প্রযুক্তিগত মন্দা’। অর্থনীতির গতি প্রায় রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছিল সাধারণ মানুষ। ধাক্কা খেয়েছিল বিনিয়োগের বাজারও। ঠিক সেই সময় আছড়ে পড়ে করোনা। জীবন-জীবিকা প্রায় লাটে উঠে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। অকল্পনীয় ক্ষতির মুখে পড়ে অর্থনীতি। শুধু ভারতের নয় গোটা বিশ্বের।
advertisement
আরও পড়ুন- অরুণাচল থেকে অপহৃত ১৭ বছরের তরুণ! ভারতে ঢুকে অপহরণ করেছে চিন, অভিযোগ
আইএমএফ জানিয়েছে, ২০২০ সালে ৩.২ শতাংশ সংকুচিত হয় বিশ্ব অর্থনীতি। অনুমান করা হয়েছিল, পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে অর্থনীতি ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। ২০১৯ সালে বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ২.৮ শতাংশ বৃদ্ধির মুখ দেখেছিল। এই পরিসংখ্যান মোটেও উৎসাহব্যাঞ্জক নয়। তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে এই পতনের হার আরও বাড়বে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্থনীতি হিসেবে ভারতও রেহাই পাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে না রেখে ভারতের উচিত, সুবিধেগুলি উন্মোচন করা।
আরও পড়ুন - প্রেমিকার মায়ের জন্য কিডনি দান করলেন প্রেমিক, এক মাসের মধ্যে ছেড়ে গেলেন সেই প্রেমিকা, তারপর...
তবে এর মধ্যেও আশার রুপোলি আলো দেখছেন ‘ইন্ডিয়া গ্রোথ স্টোরি’তে বিশ্বাসীরা। তাই ২০২২-২৩ কেন্দ্রীয় বাজেটের কাছে প্রত্যাশা অনেক। সুনির্দিষ্টভাবে বললে, চাহিদা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনস্বাস্থ্য পরিষেবা, এমএসএমই সেক্টরে ফোকাস করার পরামর্শ দিচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। রিয়েল এস্টেট ও অটো সেক্টরেও আরও আর্থিক বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রয়োজন। কারণ এই দুটি ক্ষেত্রই বর্তমানে সবথেকে বেশি চাকরি তৈরি করছে এবং এর প্রভাবেই বাকি ক্ষেত্রগুলিতেও ব্যপক বৃদ্ধি হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ আসার আগেও দেশের কর্মক্ষেত্রে চরম সঙ্কট ছিল। ২০১৭-১৮ সালের একটি সমীক্ষায় দেশের বেকারত্বের হার বিগত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছিল। এরপর অতিমারির জেরে আরও বৃদ্ধি পায় বেকারত্বের সমস্যা। দেশজুড়ে লকডাউনের জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় কল-কারখানা। কাজ হারান লক্ষাধিক মানুষ। ২০১১-১২ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রায় ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ২০১৮-১৯ সালে কর্মক্ষেত্রে সামান্য উন্নতি দেখা দিলেও করোনার উপর্যপরি দু’টি ঢেউয়ে সব তলিয়ে গিয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারি ক্ষেত্রগুলিতেও নিয়োগ প্রক্রিয়া নানা জটে থমকে রয়েছে। বড় সংস্থাগুলিও আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান তৈরি। তাই এই মুহূর্তে ভারতের দূরদর্শী বাজেটের প্রয়োজন। কেন্দ্রের উচিত শক্ত হাতে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা। কারণ, এটাই সময়ের দাবি।