তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটা পপুলিস্ট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যা কার্যকর হলে সরকারি কোষাগারে চাপ বাড়বে, সঙ্গে বোঝা বাড়বে করদাতাদের উপর।
তবে পুরনো স্কিমের চেয়ে নতুন পেনশন স্কিমকেই এগিয়ে রাখছেন অ্যাক্সিস পেনশন ফান্ডের এমডি এবং সিইও সুমিত শুক্লা। তিনি বলেছেন, ‘অধিকাংশ দেশই বেনিফিট সিস্টেম বা ওল্ড পেনশন স্কিম বাতিল করে দিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন- গয়না কেনার দুর্দান্ত সুযোগ! ৫০ হাজার টাকার নীচে নামল সোনার দাম
কারণ বিশ্ব জুড়েই সরকারের উপর পেনশনের দায় বাড়তি বোঝার মতো। এর জন্য ব্যাপক ক্ষতির মুখেও পড়তে হয়’। প্রসঙ্গত, নতুন পেনশন স্কিমটি সেই সমস্ত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে যাঁরা ১ জানুয়ারি, ২০০৪-এর পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
এখানে উভয় পেনশন স্কিম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। দেখে নেওয়া যাক এটা কীভাবে সরকার, কর্মচারি এবং পেনশনভোগীদের প্রভাবিত করছে।
নতুন পেনশন স্কিম কী: কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মচারীদের জন্য একটি নতুন বা জাতীয় পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছে (সশস্ত্র বাহিনী ছাড়া)। যাঁরা ১ জানুয়ারি ২০০৪-এর পর চাকরিতে যোগদান করেছেন তাঁদের উপর এটা প্রযোজ্য।
নতুন পেনশন স্কিম আসার পর তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বেশিরভাগ রাজ্যই এটা চালু করে। ল্যাডার ৭ ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ সদগোপন বলছেন, ‘সরকারকে কর্মচারিদের পেনশন দিতেই হবে। কিন্তু রাজকোষের উপর চাপ পড়ছে। তাই সিস্টেম বদলের দরকার ছিল। ফের পুরনো সিস্টেম ফিরিয়ে আনলে ফল মোটেই ভাল হবে না’।
নতুন পেনশন স্কিমে অবসরকালীন তহবিল তৈরি করতে সরকারি কর্মচারিরা ১০ শতাংশ টাকা দেন। সরকার দেয় ১৪ শতাংশ। এনপিএস স্বেচ্ছায় বেসরকারি খাতের কর্মীদের জন্যও উন্মুক্ত, যদিও কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। এনপিএস-এর অধীনে কাটা পরিমাণ ইক্যুইটি মার্কেট এবং সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়।
অবসর গ্রহণের সময় কর্মীরা মোট টাকার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত তুলতে পারেন, যা করমুক্ত। বাকি ৪০ শতাংশ বাধ্যতামূলকভাবে একটি বার্ষিকীতে রূপান্তরিত হবে, যা পেনশন আয় তৈরি করবে।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের DA Hike এর আগেই মোদি সরকারের বিশাল আপডেট
পুরনো পেনশন স্কিমের বিপরীতে যা একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়। তাছাড়া এনপিএস-এর পরিমাণ বাজারের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘমেয়াদে ইক্যুইটি বাজারের র্যালি এনপিএসের পক্ষে, তবে স্বল্পমেয়াদী অস্থিরতার সম্ভাবনাও রয়েছে।
পুরনো পেনশন স্কিম: ওল্ড পেনশন স্কিমের অধীনে, যে সমস্ত কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা ১ জানুয়ারি ২০০৪-এর আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা পড়েন। এই স্কিমে শেষ বেতন ও মহার্ঘ ভাতার ৫০ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা অবসর গ্রহণের পর পেনশন হিসেবে পাওয়া যায়।
এই পেনশন পাওয়ার অন্যতম শর্ত কর্মচারিকে ১০ বছর কাজ করতেই হবে। সবচেয়ে বড় কথা হল, ওল্ড পেনশন স্কিমে পেনশনভোগীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে পারিবারিক পেনশন দেওয়া হয়।
এনপিএস-এ কি ওপিএসের মতো নির্দিষ্ট পেনশন: না। কর্মচারিরা যদি বেশি পেনশন চান তাহলে নির্ধারিত ১০ শতাংশের পরিবর্তে বেশি টাকাও রাখতে পারেন। তাহলেই অবসরে মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়া যাবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো পেনশন স্কিমের থেকে নতুন পেনশন স্কিম অনেক ভাল। কারণ রিটার্নের পরিপ্রেক্ষিতে, কর্মচারীরা অবসর গ্রহণের সময় মোটা অঙ্কের টাকা পাবেন। তাছাড়া একজন কর্মচারীর কাছে এনপিএস-এ বিনিয়োগের জন্য ইক্যুইটি এবং ঋণ তহবিলের বিকল্প রয়েছে, যা আরও ভাল রিটার্ন দিতে পারে।