শাল গাছের বীজ অনেকের কাছে ‘শাল বীজ’ আবার অনেকের কাছে ‘শালুই’ নামে পরিচিত। এই বীজ থেকে তেল উৎপন্ন হয়, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগে। সাধারণত বৈশাখ মাসের শেষ দিক থেকে তা পেকে পড়তে শুরু করে মাটিতে। এটা পাওয়া যায় সাধারণত আষাড় মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষ সেই বীজকে কুড়িয়ে নিয়ে আসেন জঙ্গল থেকে। এরপর ওই বীজের স্তুপে আগুন লাগিয়ে দেন। ফলে বাইরের অংশ পুড়ে যায়। তারপর সেগুলো রাস্তার উপর মেলে দেওয়া হয়। বেশ কিছুক্ষন রোদ পাওয়ার পর ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে বীজের ভেতরের দানা বের করা হয়। সেই বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন। এর দাম অবশ্য চাহিদার উপর বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন রকম হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: SIP শুরু করতে চাইছেন? তাহলে জেনে রাখুন এই তিন সেরা মিউচুয়াল ফান্ডের নাম
জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রেখেই অর্থ উপার্জনের অন্য এক দিক। আর যে বীজগুলো জঙ্গলে থেকে গেল তা থেকেই জন্ম নেবে আরো হাজার হাজার শাল গাছ, যা জোগাবে আমাদের আগামীর অক্সিজেন। শাল বীজের ব্যবসায় লাভের মুখ দেখছে জঙ্গলমহলের প্রান্তিক মানুষজন। জুন ও জুলাই মাসে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম বাঁকুড়া পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ শাল জঙ্গলের মাটি ঢেকে যায় ঝরা শালের ফলে। সেই ফল জড়ো করে তার ভেতরের একমাত্র বীজটি সংগ্রহ করে বিক্রি এখন এই কয়েকদিন জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষের আয়ের অন্যতম মাধ্যম।
আরও পড়ুন: অবশেষে EPF-এ ৮.২৫ শতাংশ সুদের অনুমোদন দিল সরকার, কবে পাবেন এই সুদ? জেনে নিন
এবার সেই বীজ পাইকার ফড়েদের হাতবদল হয়ে চলে যায় ভিনরাজ্যে। এই বীজ পেষাই করে পাওয়া যায় বহুমূল্য তেল এবং মাখন। এই মাখন কোক বাটারের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়। শাল বীজ থেকে প্রাপ্ত তেল ও মাখন সাবান শিল্পে, ভোজ্য বনস্পতি শিল্পে, প্রসাধনী শিল্পে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। জঙ্গলের কোনও কিছুই ফেলে দেওয়ার নয়। এখনও গ্রাম বাংলার মানুষের একটি বড় অংশের আয়ের উৎস জঙ্গল।
তন্ময় নন্দী