এই বিপ্লবের গভীরতা বোঝা যায় বসিরহাটের মালঞ্চ, ত্রিমোহিনী, হাসনাবাদ বা সরবেড়িয়ার মতো আড়ৎগুলোতে কান পাতলেই। প্রতি সপ্তাহে কয়েকশো কোটি টাকার চিংড়ি এখান থেকে পাড়ি দিচ্ছে কলকাতা, ভিন রাজ্য ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারে। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের মোট চিংড়ি রফতানির প্রায় এক-চতুর্থাংশই জোগান দেয় এই অঞ্চল, যা এর অর্থনৈতিক গুরুত্বকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: জেলায় আবারও ভয় ধরাচ্ছে ডেঙ্গি, নবমীর রাতে ধুম জ্বর ১৬ বছরের নাবালিকার, পুজো শেষে মৃত্যু
তবে এই বিপুল সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এক অনবদ্য মেলবন্ধন। পুরনো ধ্যানধারণা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এখানকার চাষিরা এখন যুক্ত করেছেন বিজ্ঞানসম্মত কৌশল। উন্নত মানের খাদ্য, নিয়মিত জলের স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে আধুনিক ব্যবস্থার প্রয়োগ একদিকে যেমন উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনই কমিয়েছে লোকসানের ঝুঁকি। প্রযুক্তির এই ছোঁয়া সরাসরি বদলে দিচ্ছে চাষিদের জীবনযাত্রার মান। একসময় যাঁরা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালাতেন, আজ তাঁরা বড় রফতানিকারক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
আরও পড়ুন: পাশের বাড়ির বউমার চালচলন ঠিক লাগছে না, রাতে ও কে আসছে ঘরে, প্রতিবেশীরা উঁকি মারতেই ফাঁস,লজ্জা-লজ্জা
সবচেয়ে বড় আশার আলো সঞ্চার করেছে তরুণ প্রজন্মের এগিয়ে আসা। সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় প্রশিক্ষণ ও সহজ ঋণ নিয়ে নতুন উদ্যমে এই পেশায় যোগ দিচ্ছে তারা। ফলে চিংড়ি চাষ এখন আর শুধু একটি জীবিকা নয়, এটি হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলের মানুষের আত্মবিশ্বাস, স্বনির্ভরতা আর সম্মানের প্রতীক। অবশ্য সাফল্যের এই পথচলা একেবারেই সহজ নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর আন্তর্জাতিক বাজারের অনিশ্চয়তা মাঝেমধ্যেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সঠিক দিশায় এগিয়ে চলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এখানকার অভিজ্ঞ চাষিরা। তাঁদের চোখেমুখে এখন একটাই স্বপ্ন—বসিরহাটের এই সোনালী ফসলকে বিশ্ব দরবারে আরও উঁচুতে পৌঁছে দেওয়া।