আরও পড়ুন: সারা বছর ছুটি? ৩৬৫দিন ছুটিতে থাকলেও পাবেন পুরো বেতন, এই সংস্থার বড় উপহার
কিন্তু ভোজ্য তেলের মূল্য হ্রাসের পর সব মহলেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এর পর কি তা-হলে দুধ, সাবান এবং শ্যাম্পুর দামও কমতে চলেছে। তবে তেমনটা না হওয়ারই সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্ট বলছে যে, ফাস্ট-মুভিং কনজিউমার গুডস বা এফএমসিজি (FMCG) কোম্পানিগুলির তরফে জানানো হয়েছে, তারা পণ্যের দাম কমাবে না। বরং তার পরিবর্তে বারবার মূল্য বৃদ্ধির গতি কমানো হবে।
advertisement
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সপ্তাহে অপরিশোধিত পাম তেল, সয়া তেল, সোনা এবং রুপোর উপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে। আর এই ছাড়ের ঘোষণার পরে ইতিমধ্যেই ব্র্যান্ডেড ভোজ্য তেলের প্রস্তুতকারীরা পাম তেল-সহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য হ্রাস করেছে।
আরও পড়ুন: আগামী ৫ বছরে Air India- জন্য দুশোর বেশি বিমান কেনার পরিকল্পনা TATA-র!
এফএমসিজি-র আওতায় রয়েছে দুধ, সাবান, শ্যাম্পু এবং বিস্কুট। সাধারণত ডিটারজেন্ট, খাদ্যদ্রব্য, জৈব-জ্বালানি এবং প্রসাধনী দ্রব্য বা কসমেটিকস তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয় পাম তেল। আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন– শ্যাম্পু, মার্জারিন, সাবান, চকোলেট, বিস্কুট এবং নুডলস তৈরি করতেও ব্যবহার করা হয় ভোজ্য তেল। ফলে ভোজ্য তেলের দাম বাড়লে এই সব ইন্ডাস্ট্রির উপরও তার প্রভাব পড়ে।
প্রতি টন ১৬২৫ ডলারের পরিবর্তে অপরিশোধিত পাম তেলের নতুন ভিত্তি আমদানি মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রতি টনে ১৬২০ ডলার। একই ভাবে আরবিডি পাম তেল এবং আরবিডি পামোলিন তেলের ভিত্তি মূল্যও কমে হয়েছে যথাক্রমে প্রতি টনে ১৭৫৭ ডলার এবং ১৭৬৭ ডলার। আবার অপরিশোধিত সয়া তেলের দাম প্রতি টনে ১৮৬৬ ডলারের পরিবর্তে কমে হয়েছে ১৮৩১ ডলার। এক জন আমদানিকারীকে কত পরিমাণ কর দিতে হবে, তা নির্ণয় করতেই এই ভিত্তি মূল্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, উইপ্রো কনজিউমার কেয়ার অ্যান্ড লাইটিংয়ের প্রেসিডেন্ট (কনজিউমার কেয়ার বিজনেস) অনিল চুঘ (Anil Chugh) জানিয়েছেন, মূল্য বৃদ্ধির গতি কমবে ঠিকই। কিন্তু ওই সব পণ্যের দাম কমবে না।
সম্প্রতি উচ্চ খরচের মাত্রার জেরে এই সেক্টরের কিছু সংস্থা নিজেদের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করেছিল। আবার কোনও কোনও সংস্থা মূল্য বাড়ানোর পরিবর্তে পণ্যের পরিমাণ বা ওজন কমিয়ে দিয়েছিল। যাতে বিক্রির উপর কোনও প্রভাব না-পড়ে। চলতি বছরের এপ্রিল ও মে– এই দুই মাসে এফএমসিজি মেজর হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড বা এইচইউএল খরচের পরিমাণ বৃদ্ধির কথা জানিয়ে নিজেদের পণ্যের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল।
আসলে বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া গত মে মাসে ভোজ্য তেলের রফতানি বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে ওই মাসে ভারতের পাম তেলের আমদানি এপ্রিলের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (Solvent Extractors’ Association বা SEA)-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, ভারত গত মে মাসে প্রায় ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ২২ টন পাম তেল আমদানি করেছিল। আর এপ্রিলে আমদানি করা পাম তেলের পরিমাণ ছিল ৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৫০৮ টন।
আরও পড়ুন: Pension News: পেনশন সংক্রান্ত বিষয়ে বিরাট সিদ্ধান্তের পথে মোদি সরকার!
প্রতি বছর ভারত প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টনেরও বেশি ভোজ্য তেল আমদানি করে। তার মধ্যে প্রায় ৮০ থেকে প্রায় ৮৫ লক্ষ টনই (প্রায় ৬৩ শতাংশের কাছাকাছি) হল পাম তেল। ফলে ভারতই হল বিশ্বের সর্বোচ্চ পাম তেল আমদানিকারী দেশ। আর পাম তেলের এই চাহিদা মেটাতে ভারতকে নির্ভর করতে হয় ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার উপর। সমগ্র ভোজ্য তেলের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি আসে ইন্দোনেশিয়া থেকেই। আর বাকি অংশটা আসে মালয়েশিয়া থেকে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টন পাম তেল আমদানি করে ভারত।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছিল। যদিও এই রফতানি নিষেধাজ্ঞা অপরিশোধিত পাম তেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না। বরং রিফাইন ও ব্লিচ করা গন্ধযুক্ত পামোলিন তেলের ক্ষেত্রেই এই রফতানি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। এই বিষয়ে ঘোষণার প্রায় এক মাস পরে অর্থাৎ ২৩ মে নাগাদ ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া।