এই নিয়ে আলোচনা করেছেন মানি কন্ট্রোলের জ্যাশ কৃপলানি এবং ইউটিআই এমএফ-এর প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ভেট্রি সুব্রহ্মণ্যম। ফান্ড হাউজের প্যাসিভ প্রোডাক্ট এবং শিল্প ক্ষেত্রে নতুন প্রতিযোগিতা নিয়েও দীর্ঘক্ষণ কথোপকথন চালান তাঁরা। এখানে সেই কথোপকথনের সম্পাদিত অংশ তুলে দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: তিন দিনে বিনিয়োগকারীদের মূলধন বাড়ল ১০.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা! কোন ম্যাজিকে?
advertisement
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শেয়ার বাজারকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে বলে আপনি মনে করেন?
নিঃসন্দেহে বিশ্ব অর্থনীতিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশেষ করে সরবরাহ ক্ষেত্রে। কোভিডের জেরে বিভিন্ন দেশ নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করছিল। কিন্তু অতিমারি স্তিমিত হতেই বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি তা প্রত্যাহার করে নিতে উদ্যত হয়। এর মধ্যেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর ফলে সাপ্লাই চেন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ ওই অংশ থেকে তেল, গ্যাস এবং কয়লা সরবরাহ হয়। তাছাড়া কৃষি পণ্য এবং ধাতু সরবরাহের ক্ষেত্রেও এই দুটি দেশ অন্যতম। যুদ্ধের ফলে এই সরবরাহ ধাক্কা খেয়েছে।
এই সময় বাজারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে?
সুব্রহ্মণ্যম বলছেন, কোনও কারণেই বিনিয়োগ বন্ধ করা চলবে না। বরং ভবিষ্যতে বেশি লাভ পেতে চাইলে বাজারে বিনিয়োগের এটাই সেরা সময়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বড় কোম্পানিগুলির শেয়ার বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। দাম কমেছে। এটা প্রথমবার নয়, আগেও এমনটা হয়েছে। আবার ভবিষ্যতেও হবে। দাম ওঠানামা করতে থাকবে, এটাই বাজার। সেই অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে হবে। বরং দাম বাড়লে সেই সময় বিনিয়োগকারীদের সতর্ক হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: গাড়ি কিনবেন? বাম্পার ছাড় দিচ্ছে হোন্ডা, দেখে নিন কোন মডেলে কত ডিসকাউন্ট!
কোন সেক্টরে বিনিয়োগ লাভজনক হবে?
এর উত্তরে ভেট্রি সুব্রহ্মণ্যম বলছেন, এই মুহূর্তে আর্থিক খাতে বিনিয়োগই লাভজনক বলে মনে করা হচ্ছে। কোম্পানিগুলিও তাঁদের লাভের ব্যাপারে আশাবাদী। স্বয়ংক্রিয় খাতে গত দু’বছরে সর্বোচ্চ ভলিউমের চেয়ে ২০-৩০ শতাংশ কম। এটা কিছুটা অস্বাভাবিক। তবে ভবিষ্যতে এর চাহিদা বাড়বে। কারণ ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে তিন বছরেও চাহিদা সর্বোচ্চের নীচে থাকতে পারে না। তাই বাজারের নিয়মেই এরও চাহিদা বাড়বে।
কেন ইউটিআই-এমএফ এতগুলো প্যাসিভ ফান্ড চালু করছে, বিশেষ করে ফ্যাক্টর-ভিত্তিক ফান্ড? কেন এখনও কোনও আন্তর্জাতিক তহবিল চালু হয়নি?
আমরা ফ্যাক্টর-ভিত্তিক বিনিয়োগ কৌশলগুলিতে ফোকাস করছি। এর মাধ্যমে, বিনিয়োগকারীরা একটি সক্রিয় ফান্ড হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন এবং পড়ে এটিকে প্যাসিভ ফান্ডে রূপান্তর করতে পারেন। আমরা সম্প্রতি এসঅ্যান্ডপি বিএসই সূচকের উপর ভিত্তি করে একটি সূচক তহবিল চালু করেছি। এর সঙ্গে, নিফটি মিডক্যাপ ১৫০ কোয়ালিটি ৫০ ইনডেক্স ফান্ডের জন্য ফাইল করা হয়েছে। যখন মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য বিদেশি বিনিয়োগের সীমা বাড়ানো হবে, তখন আমরা আন্তর্জাতিক তহবিলও চালু করব।
আরও পড়ুন: মহাধামাকায় মধ্যবিত্তের বড়দিন! কলকাতায় সোনার দামে ফের কাঁপানো পতন
ভেট্রি আরও বলেছেন, ডিসেম্বর-ত্রৈমাসিকের ফলাফলগুলি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাচ্ছে, একাধিক এনএফও লঞ্চগুলি বিতরণ ব্যয়ের কারণে এএমসি মার্জিনকে প্রভাবিত করেছে। এতে প্রতিযোগিতা বাড়ছে কারণ নতুন চালু হওয়া প্যাসিভ ফান্ডগুলো খুব কম টিইআরএস চার্জ করছে। প্যাসিভ তহবিলে বিনিয়োগের এই হাওয়া আগামী দশক বা তারও বেশি সময় ধরে বাড়তে পারে।
আপনি কি সক্রিয় তহবিল ব্যবস্থাপকদের কাছে এটা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন?
জবাবে ভেট্রি বলছেন, আমরা বাকি বিশ্বের থেকে যা শিখতে পারি তা হল যে বাজারগুলি যত বেশি প্রাতিষ্ঠানিক হবে, বিনিয়োগকারীদের আউটপারফরমেন্স তত বাড়বে। একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এতে বাজারকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলবে। আউটপারফরম্যান্স অব্যাহত থাকলে, কোন বিনিয়োগ কৌশল একে অন্যকে টেক্কা দেবে তা বোঝা খুব কঠিন। তাই আপাতত উভয় কৌশলেরই টিকে থাকার জায়গা আছে।