আসলে এত দিন যদি কেউ কোনও অর্থনৈতিক ভুল করেও থাকেন তা হলে তা শুধরে নেওয়ার সময় হাতে থাকে। এই দশকটিতেই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখতে হবে। যা নিজের এবং পরিবারের জন্য একটি সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: গুণে শেষ করা যাবে না আপনার টাকা! জেনে নিন সহজে টাকা করার মোক্ষম কৌশল
advertisement
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ভুল করা উচিত নয় এই সময়।
• অবসর গ্রহণের জন্য সঞ্চয় না রাখা
এই সময় মনে হতেই পারে অবসর নেওয়ার এখনও ঢের দেরি। কিন্তু এই ধরনের চিন্তা ভাবনা বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। সব থেকে বড় বিপদ হবে সঞ্চয় সঠিক না হলে। তাই যত শীঘ্র সম্ভব অবসরের জন্য অর্থ সঞ্চয় করে রাখতে হবে।
সমাধান সহজ: এখনই সঞ্চয় করা শুরু করতে হবে। একজন স্বাধীন বা স্ব-নিযুক্ত ব্যক্তির উচিত পেনশন অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করা শুরু করা যায়। এর মধ্যে IRA, Roth IRA, SEP (সরলীকৃত কর্মচারী পেনশন) IRA বা একক 401(k)-সহ বেশ কয়েকটি পথ রয়েছে। কোনও ব্যক্তি কোন ধরনের পথ বেছে নিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করছে তিনি করছাড়ের সুবিধা পাবেন কি না।
• ক্রেডিট কার্ডের ঋণজাল
ক্রেডিট কার্ড ঋণ চালানো সহজ। কিন্তু দেনার দায় বড় দায়। একটি রিপোর্ট বলছে, আমেরিকানরা গড়ে তিনটি করে ক্রেডিট কার্ড চালান। তবে গত কয়েক বছরে এই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সংখ্যাটা কমছে। আর সেটাই আশার আলো বলা যায়।
আসলে উচ্চ হারে সুদের বিনিময়ে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা করলে প্রতি মাসে ন্যূনতম একটি অর্থ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকেন গ্রাহক। এটা স্বাভাবিক ভাবেই কোনও মানুষের ক্রয় বাড়িয়ে দেয়। তাই নগদের বিনিময়ে কেনাকাটা করাই ভালো। যদি একান্তই প্রয়োজন হয় তবে ‘প্রিপেইড ক্রেডিট কার্ড’ বেছে নেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ৩০ দিনের মধ্যে আইটিআর ভেরিফাই না করলে পড়তে পারেন বিরাট অসুবিধায়
• সম্পত্তিতে বিনিয়োগ না করা
রিয়েল এস্টেট সাধারণত একটি স্মার্ট বিনিয়োগ। ৩০-এর কোঠায় বয়স হলে যে যদি সম্ভব হয় একটি সম্পত্তি কিনে রাখা ভালো। তবে নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বাড়ি কিনলে কিন্তু লাভের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে বেশি। তা ছাড়া, বাজারের পরিস্থিতির উপর নজর রাখাও জরুরি। কারণ দরপতনের সময় সম্পত্তি কেনা যতটা ভালো, বেচা একেবারেই নয়। সম্পত্তি বিনিয়োগ এক সময় ভালো রিটার্ন দিতে পারে। পরবর্তী কালে যখন পরিবার বৃদ্ধি পাবে তখন বড় বাড়ি কেনার জন্য সেটি ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
• বাজেট নির্ধারণ না করা
এ এমন একটা সময় যখন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং সামাজিক স্বাধীনতা একত্রে মিলিত হয়। ২০ বছর বয়সে যে পরিমাণ টাকা রোজগার করার স্বপ্ন মানুষ দেখে হয় তো এ সময় তার কয়েকগুণ সে রোজগার করতে পারে। আর সেখানেই বাধে গোলমাল। সংযম না থাকলে জীবন বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। আর তাতে খরচও লাগাম ছাড়া হতে পারে। অবশ্যম্ভাবী ভাবেই সঞ্চয় কমতে থাকে।
তাই সমস্ত কাজ করার জন্যই একটি বাজেট নির্দিষ্ট করে ফেলা দরকার। বাইরের খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটায় কত টাকা জলের মতো বয়ে যাচ্ছে তার দিকে একবার তাকানো দরকার। ৩০-এর কোঠায় খুব কঠোর ভাবে সঞ্চয় শুরু করা প্রয়োজন। তবে হ্যাঁ, কৃচ্ছ্র সাধন করার প্রয়োজন নেই। শুধু মনে রাখতে হবে, সঞ্চয় যেন বেশি হয়।
• পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা না ভাবা
জীবন সব সময় এক রকম যায় না। ৩০-এর কোঠায় দাঁড়িয়ে আগামী দিনে কী কী পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং তার উপর অর্থনৈতিক প্রভাব কী পড়তে পারে তা ভাবা দরকার। চাকরি হারানো, স্বাস্থ্য সমস্যা, দুর্ঘটনা প্রভৃতির কথা মাথায় রাখা উচিত। সর্বোপরি সন্তানের শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়েও ভাবনাচিন্তা জরুরি। জরুরি বিমা করানো।
এই সব বিষয় বিবেচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনে অপ্রত্যাশিত খরচ আসতে বাধ্য, কিন্তু একটু পূর্বাভাস থাকলে নিজেকে প্রস্তুত রাখা যায়। আর প্রস্তুতি থাকলে সব কাজ সহজে করা সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ভাবনা চিন্তা করে নিজেকে অসুস্থ করে ফেলার কোনও অর্থ নেই। দৈনন্দিন যাপনের পাশাপাশি রোজগারের একটা অংশ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য সঞ্চয় করে রাখাই ভালো।