খেজুরের রস ব্যবসায়ী জানান, মাত্র চার মাসে খরচ বাদ দিয়ে তাদের আয় দু’লাখটাকা। এই দু’লাখ টাকা আয় করতে তাদের আড়াইশো গাছ পাট্টা নিতে হয়। প্রত্যেকটি গাছ পিছু চার মাস পর ১০০ টাকা করে দিতে হয়। অর্থাৎ আড়াইশোটি গাছের জন্য তাদের চার মাসের খরচ ২৫ হাজার টাকা। শুধু যে টাকার চুক্তি হয়ে থাকে তেমনটাও নয়। প্রত্যেক গাছ পিছু ১০০ টাকা অথবা প্রত্যেক গাছের জন্য এক কিলো করে গুড় বরাদ্দ করতে হয় গাছের মালিকের জন্য। অর্থাৎ গাছের মালিক চাইলে ১০০ টাকার পরিবর্তে ১ কিলো গুড় নিয়ে থাকেন শিউলিদের কাছ থেকে। আর এমন ভাবেই সমস্ত খরচবাদ দিয়ে তাদের চার মাসের আয় দু’লাখ টাকা।
advertisement
আরও পড়ুন: বাদামি নাকি সাদা? কোন ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর জানেন? দামের নিরিখে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন আজই
শীতের আবহে গ্রাম বাংলার অতিপ্রিয় খাবার হরেক রকমের পিঠে ও পায়েস। ঘরে ঘরে খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি হয় সেগুলি ৷ তাই লক্ষ্মী লাভের আশায় এখন থেকেই খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত এক শ্রেণির মানুষ । শুধু পিঠে পায়েস তৈরি হয় এমনটা নয়, খেজুরের গুড় দিয়ে নানা ধরনের মিষ্টি তৈরি হয়। তাই শিউলির ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে তাদের এই খেজুর গুড় বিক্রি করে লক্ষী লাভ করছেন। খেজুর গাছের রস ফুটিয়ে তৈরি হয় নলেন গুড় থেকে ঝোলা গুড় কিংবা পাটালিও।
শীতের মরশুম শুরু হতেই বাড়ছে নলেন গুড়ের চাহিদা। তবে নলেন গুড় হাতে পেতে সময় আছে বলে দাবি শিউলিদের৷ তার আগেই বাজার ছেয়েছে নকল নলেন গুড়৷ কিন্তু এই গুড়ে চিনি মেশানো থাকায় তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না বলে জানাচ্ছেন শিউলিরা৷ বীরভূমের শিউলি যুব্বার আলী মণ্ডল বলেন, “আমি ২০ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি ৷ সাধারণত শীতের মরশুম শুরু হলেই নলেন গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তবে সেটা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই কম রয়েছে এবছর। এর কারণ এখনও সেভাবে শীতের দেখা মেলেনি বীরভূমে। তাই ঠিক ভাবে গুড় তৈরি হচ্ছে না। তবে আগামী দিনে বিক্রি ভাল হবে বলে আশাবাদী।”
শিউলির ব্যবসায়ী আরও জানান, মাত্র চার মাস তাঁরা এখানে থাকবেন। এবং সবকিছু বাদ দিয়ে চার মাসে তাঁদের আয় আনুমানিক প্রায় দু’লাখ টাকা। চার মাস পর যখন শীতের আমেজ আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে থাকবে, তখন তাঁরা বীরভূম ছেড়ে নদীয়াতে নিজের জেলায় ফিরে গিয়ে ডাব বিক্রি করবেন।
সৌভিক রায়