কিন্তু আজকের জাঙ্ক ফুডের দুনিয়ায় শাক-সবজি ও ফল খাওয়ায় বেশ অনীহা ছোটদের। কী ভাবে ফল খাওয়ানো যায়, বিশেষ করে ছোটদের, তা নিয়ে অভিভাবকদের চিন্তার অন্ত নেই। যারা ফল খেতে চায় না, তাদের কী ভাবে ফলের পুষ্টি দেওয়া যায়, তাই নিয়ে কয়েক বছর আগেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
advertisement
আরও পড়ুন: দুর্গাপুর টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে অধ্যাপক নিয়োগের বিরাট সুযোগ! জানুন
এই চিন্তাভাবনা থেকে সৃষ্টি মরশুমি বিভিন্ন ফলের রস জমিয়ে সুস্বাদু ফ্রুট আইস স্ক্যান্ডির। সৌজন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রায়োজেনিক রিসার্চ সেন্টার। গবেষণা এবং ক্যান্ডি তৈরির সামগ্রী প্রক্রিয়াটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের টেকনিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট অসীম চট্টোপাধ্যায়। অবসর নেওয়ার পরও অসীমবাবু নিজের উদ্যোগে তৈরি করেছেন ফলের রসের আইস ক্যান্ডি। 'ফুটুস-জি' ব্র্যান্ড নামে তা বাজারে পাওয়া যায়।
বিভিন্ন মরশুমি ফলের ক্যান্ডি তৈরির উপরই জোর দেন অসীমবাবু। আম, জামা, আতা, সবেদা, আনারস, তরমুজ, কলা, কদবেল, করমচা, কামরাঙ্গা- এরকম হরেক ফল এমনকী ডাবের জলের আইস ক্যান্ডিও তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, বাচ্চাদের ফলের দিকে মুখ ফেরাতেই এই উদ্যোগ, তাই ফল সংগ্রহ, বাছাই এবং তার পরিচ্ছন্ন প্রক্রিয়াকরণের উপর কড়া নজরদারি থাকে। আইস ক্যান্ডি তৈরির জন্য জাম, কামরাঙ্গা, করমচা, আতার মতো গ্রামবাংলার সাধারণ ফলগুলিকে বেছে নেওয়ার পিছনেও আছে বিশেষ চিন্তাভাবনা ও সতর্কতা। এই সব ফল ফলানোর জন্য রাসায়নিক সার বা কীটনাশক সাধারণত ব্যবহার হয় না। সেজন্য ফলের নিজস্ব খাদ্যগুণ বজায় থাকে। এই ফ্রুট আইস ক্যান্ডি আদতে ফলের জমাট বাঁধানো রস, তাই বাচ্চাদের খাওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের আপত্তির কোন কারণ নেই। এতে কোনও নকল রং বা এমন কোনও কিছু ব্যবহার করা হয় না যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। আর স্বাদ? অসীম বাবুর কথায়, একবার ফুটুস-জি খেলে অন্য কোম্পানির রাইস ক্যান্ডি খেতে চায় না ক্রেতারা।
আরও পড়ুন: মিনিস্ট্রি অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সে নিয়োগের বিরাট সুযোগ! জানুন
এখন গ্রীষ্মের দাবদাহ চলেছে। এই সময় ফ্রুট আইস ক্যান্ডি বিপণন বা তৈরির ব্যবসা শুরু করার আদর্শ সময়। তবে শুধু গরমে নয়, সারা বছরই ফ্রুট আইস স্ক্যান্ডির ব্যবসার গতি ভাল। যাঁদের দোকানে ফ্রিজ আছে তাঁরা ডিলারশিপ নিতে পারেন।
ফুটুস-জি শুধুমাত্র শরীরের পুষ্টি জোগায় না, মানুষকে উপার্জনের পথও দেখায়। আগ্রহীরা ফ্রুট আইস ক্যান্ডি 'ফুটুস-জি'র ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। কেবল একটা ড্রিপ ফ্রিজ থাকতে হবে, যার দাম ২০-২৫ হাজার টাকার মধ্যে। ফলের প্রকার অনুসারে প্রতিটি আইস ক্যান্ডির বিক্রিরমূল্য ২০-২৫ টাকা।
অসীমবাবু জানিয়েছেন, গাড়িতে দু'ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যায় এমন দূরত্বে আইস ক্যান্ডি পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রে অন্তত ১ হাজার আইস ক্যান্ডি নিতে হবে। দূরত্ব আরও বেশি হলে বা ১০০০-এর কম আইস স্ক্যান্ডি নিলে পরিবহনের দায়িত্ব নিতে হবে ক্রেতাকেই।
অসীমবাবু জানিয়েছেন, 'যে কেউ নিজেও শিখে নিতে পারেন ফ্রুট আইস ক্যান্ডি তৈরির পদ্ধতি।' যথাযথ পরিকাঠামো থাকলে নিজেই ফ্রুট আইস ক্যান্ডি তৈরি করে শিখে ব্যবসা করা যায়।
ফুটুস-জি ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিয়ে বিক্রি করাই হোক কিংবা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রুট আইস ক্যান্ডি উৎপাদনের নিজস্ব পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উৎপাদন ও বিপণন পরামর্শ পেতে আগ্রয়ীরা অসীম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারেন এই নম্বরে: ৯৪৩২২-১১৮৬৮ (রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে)।