আরও পড়ুন: ভাঙল উত্থানের ধারা! ৩৫৯ পয়েন্ট কমে বন্ধ হল সেনসেক্স, আর ১৬৬০০-র তলায় নিফটি!
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, কে ঠিক করে পেট্রোল পাম্পের ডিলারদের এই কমিশন? দিল্লি পেট্রোল-ডিজেল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশীথ গয়াল জানান যে, ডিলারদের কমিশনের উপর চূড়ান্ত সিলমোহর দেয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক৷ ইন্ডিয়ান অয়েল (Indian Oil), বিপিসিএল (Bharat Petroleum Corp Ltd), এইচপিসিএল (Hindustan Petroleum Corporation Limited)-এর মতো তেল মার্কেটিং সংস্থাগুলি ডিলারের কমিশন ঠিক করার জন্য তাদের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় এবং সেখান থেকে ছাড়পত্র মেলার পরেই প্রতি লিটার তেলে ডিলারের কমিশন ঠিক করা হয়।
advertisement
এবার জেনে নেওয়া যাক, কমিশন বৃদ্ধির প্রসঙ্গে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে যে, কেন কমিশন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন ডিলাররা? গয়ালের বক্তব্য, “আসলে পেট্রোল পাম্পের মালিক হিসেবে ডিলারদের সমস্ত খরচ আমাদের নিজেদেরকেই বহন করতে হচ্ছে। ২০১৭ সালে শেষ বার আমাদের ডিলারদের এই কমিশন বাড়ানো হয়েছিল। এর পর একাধিক বার দাবি জানানো সত্ত্বেও কোনও রকম শুনানি হয়নি। তার উপর এই পাঁচ বছরে সব কিছুর প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। কর্মচারীদের বেতনও বেড়েছে প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ। এমনকী বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের বিলও। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এত কিছুর মূল্যবৃদ্ধি হলেও ডিলারদের কমিশন সেই পাঁচ বছর আগের মতোই রয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: e-KYC আপডেট করার আজই শেষ সুযোগ! দরকার লাগবে রেশন কার্ডও
বর্তমানে প্রতি লিটার তেলে প্রায় ২ শতাংশ কমিশন দেওয়া হয় ডিলারদের। অর্থাৎ প্রতি লিটার পেট্রোলে ২.৯০ টাকা এবং প্রতি লিটার ডিজেলে ১.৮৫ টাকা কমিশন পাওয়া যায়। সংগঠনগুলো বলছে, বর্তমান খরচ অনুযায়ী এই কমিশন সমর্থনযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে গয়াল দাবি করেন, বর্তমানে প্রতি লিটার তেলে ৩.৫ থেকে ৪ শতাংশ কমিশন পাওয়া উচিত ডিলারদের। এর পাশাপাশি গয়ালের আরও দাবি, কোম্পানি এবং ডিলারদের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি ৬ মাস অন্তর বাড়াতে হবে এই কমিশন।
তেল বিক্রি না-হওয়ায় কত ক্ষতি হয়েছে ?
কমিশন বাড়ানোর দাবিতে আজ সারা দেশের প্রায় ৭০ হাজার পেট্রোল পাম্প তেল কেনেনি কোম্পানির কাছ থেকে। শুধুমাত্র দিল্লির হিসেব করলে দেখা যাবে যে, এখানকার কোম্পানিগুলোর থেকে দিনে ২৭ লক্ষ লিটার ডিজেল এবং ৩০ লক্ষ লিটার পেট্রোল কেনা হয়। আমরা যদি দেশের পরিসংখ্যান হিসেবে দেখি, তাহলে দেখা যাবে, সারা দেশের কোম্পানিগুলির থেকে ৪ কোটি লিটার পেট্রোল এবং একই পরিমাণ ডিজেল কেনা হয়। যার অর্থ এত পরিমাণ তেল আজ বিক্রি হয়নি। তবে এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর সরাসরি কোনও ক্ষতি হবে না। কারণ আগামীকাল থেকে আবার পাম্পে তেল কেনা শুরু হবে। তবে কোম্পানিগুলিকে এক দিনের স্টক পরিচালনা করতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ ত্রৈমাসিকের ফলাফলের পাশাপাশি লভ্যাংশের ঘোষণা করল LIC!
ইতিমধ্যে কয়েক জন ডিলার হুমকিও দিতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই সব ডিলারের বক্তব্য, “সরকার ও তেল কোম্পানিগুলো যদি আমাদের দাবি না-মানে, তাহলে নিজেদের রুজি-রুটির জন্য আমরা অন্য পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হব।” যদিও সেই অন্য উপায় কী, সেই বিষয়টা স্পষ্ট করে না বললেও তাঁদের বক্তব্যের অর্থ অনুমান করা যায়। আসলে তাঁরা তেলে ভেজাল মেশানোর ইঙ্গিতই দিয়েছেন। যদিও এই ক্ষতির দায়ভার সরাসরি গ্রাহকদেরই বহন করতে হবে। তাই আপাতত আশা করা হচ্ছে যে, তেল কোম্পানিগুলো নিশ্চয়ই ডিলারদের চাহিদার বিষয়টা পর্যালোচনা করে দেখবে এবং তা মেটাতে কিছু একটা উপায় বের করবে।