অনেকেই মনে করেন, ত্যাগ এবং বলিদানকে অযথাই মহিমান্বত করা হয়েছে। কিন্তু কারও প্রকাশ্যে বুক বাজিয়ে এ কথা বলার সাহস নেই। কেউ বলতে চায় না, ত্যাগের জীবনযাপন নিষ্ঠুর এবং অযৌক্তিক। লাগামহীন ভোগের ভয় থেকেই শৃঙ্খলা আসে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, অতিরিক্ত সুখ খুঁজতে গেলে সবার্থপরতার বীজ রোপন করা হবে। ভোগ, বিলাসের জীবনে মানুষ অলস হয়ে যায়। আসলে এ সবই দৃষ্টিভঙ্গী। কিন্তু এটা সত্যি, বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে সুখই হল অন্তিম লক্ষ্য যা শুধুমাত্র নিরন্তর সংগ্রামের মাধ্যমেই লাভ করা সম্ভব। কিন্তু কীভাবে এর পার্থক্য করা যায়?
advertisement
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে অনেকেই ভয় পান। অনেকে আবার ভাবেন, এটা বোধহয় জুয়া। যারা শেয়ার মার্কেটে কাজ করেন তাঁরা এক একটা পাঁড় জুয়ারি। কেউ কেউ আবার ভাবেন শেয়ার বাজার ফাটকা ব্যবসা। লাভ হলে ভালো না হলে গেল। কিন্তু দায়িত্বশীল বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বাজার একটা সাধনার জায়গা। প্রচুর পড়াশোনা, গবেষণা, সময় এবং অর্থ – এখানে সফল হতে গেলে সবকিছুই লাগে। জীবন, যৌবন নিংড়ে দিতে হয়। রিটার্নও মেলে আশাতীত।
আরও পড়ুন: LPG Cylinder Booking : এই ভাবে সিলিন্ডার বুকিং করলে পেয়ে যাবেন ১০০০ টাকা ক্যাশব্যাক
বিনিয়োগকারী কীভাবে সময়, চেষ্টা এবং অর্থ বিনিয়োগ করবেন, সেই সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান থাকাও আবশ্যিক। যদি কেউ মনে করেন তাঁর বিনিয়োগ জীবনের লক্ষ্যগুলোকে পূরণ করতে সক্ষম তাহলে শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে কম টাকা লাগানো উচিত নয়। যেমন যদি কারও মনে হয় বন্ধুদের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি কাটালে কাজের সব চাপ কেটে যায় তাহলে অবশ্যই সেটা করা উচিত। কিন্তু হ্যাঁ, নিশ্চিত হতে হবে। মনে রাখতে হবে, হেডোনিস্টিক সাধনাগুলি বস্তুনিষ্ঠতাকে অসাড় করে দেয়, অভ্যাস তৈরি করে এবং কতটা অত্যধিক তা অস্বীকার করার অনুভূতি তৈরি হয়।
বন্ধুবৃত্তে এমন লোক থাকুক যে বিশ্বাস এবং আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবে, আয়না দেখাতে পারবে। এরাই বিশ্বস্ত আর্থিক উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করবে। যদি কেউ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বুঝতে পারেন এবং বন্ধু মহলে এমন কেউ থাকে যে পিছলে যাওয়ার সময় লাইনে টেনে আনবে তাহলে অবশ্যই এগনো উচিত। ভোগের পথে গভীরভাবে যাওয়ার আগে, তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির বাইরে এটি কী উদ্দেশ্যে কাজ করে সেটা নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে। তার উত্তর খুঁজে পেতে হবে।
কত ক্ষতি সহ্য করা যাবে সেটাও বুঝে নিতে হবে। বিনিয়োগ পোর্টফোলিও থাকুক। তার বাইরেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা ঢালা উচিত। দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ জরুরি। তবেই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল আর্থিক লক্ষ্যগুলো পূরণ করা সম্ভব। তবে পাশাপাশি প্ল্যান বি-ও রাখতে হয়। কারণ ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা সবার সমান নয়। কোনও আইপিও-তে অর্থ উপার্জন নিশ্চিত মনে হলে সেটা দিয়ে অবসরকালের ফান্ড তৈরি করতে যাওয়া বোকামি। বরং ছোট ছোট বাজি ধরতে হয়। যাতে ক্ষতি হলে সইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকে।
স্থিতিশীল আয় ছাড়া ঘর-গেরস্থালির খরচ সামলে বড় বিনিয়োগে হাত পাকানো প্রায় অসম্ভব। তাই খরচ কমাতে হয়। পছন্দের পোশাক, খাবার, গাড়ি, ফোন এবং অন্যান্য কিছুর পেছনে মানুষ কেন অর্থ ব্যয় করে? যাতে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীরা বাহবা দেয়। এটাই সত্য। কিন্তু কতখানি দরকারি? সেটা বুঝে নেওয়ার সময় এসেছে। কোনটা ঠিক? এই নিয়ে তর্ক করার কোনও মানে হয় না। কারণ মানুষ ভেদে সত্য পাল্টে যায়। কেউ সহজ সাধারণ জীবনযাপনকে উদযাপন করে। আবার কেউ সেটাকেই কৃপণতা হিসেবে দেখে। ভাল জিনিসকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করারও প্রয়োজন নেই। বরং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী খরচের কথা ভাবতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া ইমেজ ক্রাফটিং-এর রোগ নিয়ে এসেছে। আত্ম-সচেতন হওয়া মূল্যবান। কিন্তু মানুষ যা নয় তা হওয়ার চেষ্টা করা একটা রোগ। এতে সময় এবং অর্থ দুইই অপচয় হয়।