সোনা হল সমৃদ্ধির প্রতীক। তাই ভারতীয় পরিবারে এই হলুদ ধাতুকে গয়না বা অলঙ্কারের আকারে সিন্দুকে তুলে রাখাই রীতি। জ্যোতিষশাস্ত্রেও সোনার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। পুজো-পার্বণ ছাড়াও বিবাহ, জন্মদিন, অন্নপ্রাশন-সহ যে কোনও ধর্মীয় বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাই সোনা কেনা একপ্রকার বাধ্যতামূলক। এখানেই শেষ নয়, শুধু সোনা কেনার জন্যই একটা বিশেষ পার্বন রয়েছে এদেশে, ধনতেরস। তা ছাড়া মেয়েকে বিয়েতে প্রচুর সোনা দেওয়ার রেওয়াজ আজও রয়েছে অনেক পরিবারে। সেটা শুধু দেখানোর জন্য নয়, মেয়ে যদি কোনও দিন বিপদে পড়ে, তা হলে ওটা তার কাজে লাগবে বলে।
advertisement
আরও পড়ুন-পয়লা বৈশাখের আগেই বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে, জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট ?
মুদ্রার অবমূল্যায়ণ বা মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলায় সোনার বিকল্প নেই ঠিকই কিন্তু এর কিছু অসুবিধাও আছে। এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হল, সোনা বাড়ে না। তার সঙ্গে চুরি বা ডাকাতির ঝুঁকিও থাকে। সোনা বিশ্বের সবচেয়ে দামি ধাতুগুলির একটি। তাই হলুদ ধাতু বাড়িতে রাখতে মানুষ ভয় পায়। বদলে স্টোরেজ ফার্ম বা ব্যাঙ্কের লকার ভাড়া নিতে হয়। তারওপর সোনার দাম ওঠানামা কমে। ফলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এ থেকে স্টক বা বন্ডের মতো প্যাসিভ ইনকাম হয় না। সুদ বা লভ্যাংশও পাওয়া যায় না। গত ১০ বছরে সোনা থেকে মাত্র ৫.৭ শতাংশ রিটার্ন মিলেছে। যা নগণ্য। গত ১৫, ২০ এবং ২৫ বছরের এ থেকে ১১.৬, ১২.৪ এবং ৯.৪ শতাংশ রিটার্ন মিলেছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিফটি থেকে গত ১০ বছরে ১৫.৫ শতাংশ রিটার্ন মিলেছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যে এবার বসতে চলেছে শিল্প মেলার আসর, চলবে ৫ দিন ধরে
১৯৯৯ সালে বিএসই সেনসেক্সে ১০ গ্রাম সোনার দাম দাঁড়িয়েছিল ৪ হাজার টাকা। ২০২১ সালের শেষ দিকে এই দাম ১২ গুণ বেড়েছে। বর্তমানে সোনা এবং সেনসেক্স উভয়ই ৪৭ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। যেহেতু শেয়ারগুলো সেনসেক্সকে অতিরিক্ত লভ্যাংশ দিয়েছে সেই দিক থেকে বিচার করলে ১৯৯৯ সালের তুলনায় সেনসেক্স ১৭ গুণ বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা সোনায় কাউন্টারপার্টি ঝুঁকি রয়েছে। যেহেতু বিভিন্ন সরকার এটাকে রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে বিবেচনা করে তাই এর দামও বেশি। উল্লেখযোগ্যভাবে চিনের মতো কিছু দেশ মার্কিন ডলারের রিজার্ভকে সোনার রিজার্ভে পরিবর্তন করেছে। তাই একথা বলাই যায়, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সোনার চেয়ে অন্যান্য বিকল্পগুলিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। যদিও বিশেষজ্ঞরা পোর্টফোলিওর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সোনায় বিনিয়োগের পরামর্শ দেন।