আর্থিক রেজোলিউশন নিয়ে আমেরিকায় একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, প্রায় অর্ধেক (৪০ শতাংশ) আমেরিকানরা আরও বেশি সঞ্চয় করতে চান। এক তৃতীয়াংশ (৩৩ শতাংশ) চান ক্রেডিট স্কোর উন্নত করতে। আর বাকি ৩০ শতাংশ ব্যক্তিগত বাজেট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। আর্থিক উন্নতির জন্য আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, সেই অনুযায়ী নিতে হবে পদক্ষেপ। এখানে নতুন বছরের কিছু জনপ্রিয় আর্থিক রেজোলিউশনের হদিশ দেওয়া হল।
advertisement
আরও পড়ুন: এই স্কিমগুলোয় বিনিয়োগ করেছেন? ৫ থেকে ৮ বছরের মধ্যে টাকা ডবল হয়ে যাবে!
বেশি সঞ্চয়: অনেকেই আশ্চর্য হবেন কিন্তু শীর্ষ আর্থিক রেজোলিউশনের মধ্যে রয়েছে আরও বেশি সঞ্চয়ের প্রতিজ্ঞা। এটা বিভিন্ন ভাবে করা যায়। খরচ কমানো, বিশেষ করে ছুটির বা কেনাকাটার মরশুমে, সেভিংস অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা রাখা ইত্যাদি। এর জন্য ক্রেডিট কার্ডও ব্যবহার করা যায়। অনেক সেরা কার্ড প্রতিযোগিতামূলক পুরস্কার এবং স্টেটমেন্ট ক্রেডিট অফার করে। যেমন আমেরিকান এক্সপ্রেস গোল্ড কার্ড গ্রুভুব, দ্য চিজকেক ফ্যাক্টরি, গোল্ডবেলি, ওয়াইন ডটকম, মিল্ক বারে বার্ষিক ১২০ ডলার ডাইনিং ক্রেডিট (প্রতি মাসে ১০ ডলার স্টেটমেন্ট ক্রেডিট) দেয়।
ক্রেডিট স্কোর উন্নত করা: যদি ক্রেডিট কার্ড স্কোর কম থাকে তাহলে ২০২৩ সালে সেটা বাড়ানোই হোক অগ্রাধিকার। বিভিন্ন উপায়ে ক্রেডিট স্কোর বাড়ানো যায়। যার মধ্যে বিল সময় মতো এবং সম্পূর্ণ পরিশোধ, নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা সীমিত করা এবং খরচ কমানো। ‘এক্সপেরিয়ান বুস্ট’-এর সাইন আপ করার কথাও বিবেচনা করা যেতে পারে। এতে বিনামূল্যের পরিষেবা যা সময়মতো ইউটিলিটি, সেল ফোন, স্ট্রিমিং এবং অন্যান্য বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়।
আরও
ব্যক্তিগত বাজেট তৈরি: বাজেট কম হোক বা বেশি, ট্র্যাক করতে হবে। প্রতি মাসে কোথায় কত টাকা যাচ্ছে সেটা নখদর্পণে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তাহলেই বাজেটে কাটছাঁট করা যাবে। কোন জায়গায় খরচ কমানো যায় কিংবা কোথায় বাড়ানো দরকার সেটাও বোঝা যাবে। তাই সব খরচ লিখে ফেলতে হবে। যেমন ভাড়া, মুদিখানা, কাঁচা আনাজ, ফোন, ইলেকট্রিক বিল, ফোনের বিল ইত্যাদি। দরকারে বাজেট অ্যাপ ডাউনলোড করা যায়। তারপর রেস্তোরাঁ, পোশাক, বিনোদন খরচের কত যাচ্ছে সেটাও দেখতে হবে। এখানেই খরচ কমাতে হয়।
একবারে ক্রেডিট কার্ডের বিল শোধ: ক্রেডিট কার্ডের ঋণ যেন ক্রমেই বাড়ছে। অদৃশ্য যুদ্ধ চলছে যেন। অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর থেকে বাঁচার একটাই উপায়। ক্রেডিট কার্দের বিল সময়ে পরিশোধ করতে হবে। না হলে ধারের সুদ, তার সুদ মিলিয়ে মাথায় ঋণের পাহাড় চাপবে। ক্রেডিট স্কোর খারাপ হবে। ক্রেডিট কার্ডে ঋণ থাকলে সেটা ব্যালেন্স ট্রান্সফার ক্রেডিট কার্ডে একত্রিত করার কথা ভাবা যেতে পারে। ২১ মাস পর্যন্ত এতে কোনও সুদ দিতে হয় না। অ্যাকাউন্ট খোলার চার মাসের মধ্যে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে হয়।
আরও পড়ুন: New Business Idea|| স্বল্প ব্যয়ে বিপুল আয়, বছরভর ব্যাপক চাহিদা, এই সবজি চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা
সময়ে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ: ব্যালেন্স ট্রান্সফার ক্রেডিট কার্ডের ঋণ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আর ইনট্রো পিরিয়ড শেষ হওয়ার আগেই বিল শোধ করলে বিল শোধ করলে সবচেয়ে বেশি সুবিধে পাওয়া যায়। ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার আগে, অফারের সঙ্গে দেওয়া শর্তাবলী দেখেনিতে হবে। এতে সুদ-মুক্ত সময়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কবে সুদ মুক্ত সময় শেষ হচ্ছে জানার পর কীভাবে সময়ে বিল শোধ করা যায় তার পরিকল্পনা ছকে ফেলতে হবে। তাহলেই ঋণমুক্ত নির্ঝঞ্ঝাট থাকা যাবে।
প্রতি মাসে সম্পূর্ণ ক্রেডিট ব্যালেন্স পরিশোধ: ক্রেডিট স্কোরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হল পেমেন্ট হিস্ট্রি। ব্যালেন্স সময়ে এবং পুরো পরিশোধ করা অপরিহার্য। এতে ক্রেডিট স্কোর ভালো হয়। সুদের চার্জ বা ফি-ও হ্রাস করে। প্রতি মাসে পুরো টাকা দেওয়া সবসময় নাও সম্ভব হতে পারে। সেক্ষেত্রে সময় মতো অন্তত ন্যূনতম অর্থপ্রদান করা উচিত। এটা লেট ফি বা পেনাল্টি সুদের হার এড়াতে সাহায্য করে।
বেশি ক্রেডিট কার্ড নয়: কটা ক্রেডিট কার্ড থাকলে ভাল হয়? এর নির্দিষ্ট কোনও উত্তর হয় না। আমেরিকানরা গড়ে ৪টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এর মানে এই নয় যে ৩টে ক্রেডিট কার্ড থাকা ভালো, আর ৬টা খুব বেশি। কতটা দায়িত্বের সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড পরিচালনা করা হচ্ছে তার ওপরেই সবটা নির্ভর করছে।