বিশ্ব অর্থনীতির এমন সঙ্কটে অর্থনীতির পরিস্থিতি বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের তথ্য এবং ট্রেডের সাহায্য নেন। অর্থনীতির বিষয়ে বোঝার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল লিপস্টিক এফেক্ট (Lipstick Effect)। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই লিপস্টিক এফেক্টের সমস্ত খুঁটিনাটি।
আরও পড়ুন: জনসাধারণের জন্য সুখবর! এবার জলে চলবে ওভেন
লিপস্টিক এফেক্ট -
advertisement
লিপস্টিক এফেক্ট অর্থনীতির সেই সকল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, যেখানে জনগণ ছোট ছোট সুবিধা এবং বিভিন্ন লাক্সারির ওপর টাকা খরচ করে। এই ধরনের পরিষেবায় বিভিন্ন ধরনের মন্দা দেখা দেয়। অর্থাৎ লিপস্টিক এফেক্ট বিশ্ব অর্থনীতিতে অনেকবার দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে যখন অর্থনীতিতে মন্দা আসে অথবা কোনও অন্য ধরনের সমস্যা হয়, তখন মহিলারা দামি জিনিসের ওপর টাকা খরচ করা কমিয়ে দেন। কিন্তু সেই সময়ে মহিলারা অন্য বিভিন্ন পরিষেবায় খরচ করেন, যে সকল পরিষেবা তাঁদের মুড ভাল করে দেয়। এর ফলে তাঁদের বাজেটের ওপরে খারাপ প্রভাব পড়ে। লিপস্টিক হল এমনই একটা উপকরণ। এর ফলে অর্থনীতির ভাষায় এই ধরনের প্রভাবকে লিপস্টিক এফেক্ট বলা হয়।
লিপস্টিক এফেক্টের প্রচলন -
লিপস্টিক এফেক্ট পরিভাষার প্রচলন প্রথমবার ২০০১ সালে হয়। সেই সময় অর্থনীতিতে মন্দার কারণে এই এফেক্ট চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল। সেই সময় দেখা গিয়েছিল যে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হলেও লিপস্টিকের বিক্রিতে কোনও ভাটা পড়েনি। ১৯২৯ এবং ১৯৯৩ সালের মহামারীর সময় একই অবস্থা দেখা গিয়েছিল। এর ফলে এই ধরনের পরিস্থিতিকে লিপস্টিক ইন্ডেক্স নাম দেওয়া হয়েছে। এই থিওরি অনুযায়ী অর্থনীতির সঙ্গে কসমেটিক বিক্রির বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন: PNB-তে ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে? তা-হলে এর উপরেই মিলবে ঋণ, থাকছে আরও নানা সুবিধা!
বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমান অর্থব্যবস্থায় লিপস্টিক এফেক্ট আবার দেখা যাচ্ছে। NOD অ্যানালিস্ট নাতালিয়া বাম্বিজার (Natalia Bambiza) মতে ২০২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে লিপস্টিকের বিক্রি এক বছর আগের একই সময়ের থেকে ৪৮ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন আমেরিকা সহ বড় বড় দেশে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব জনগণের বাজেটের ওপরে পড়েছে।
অর্থনীতির সঙ্গে আন্ডারওয়ার বিক্রিরও রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক -
বিশেষজ্ঞদের মতে আন্ডারওয়ার বিক্রির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক রয়েছে। আমেরিকায় ২০০৮ সালে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছিল। সেই সময় আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের প্রমুখ অ্যালান গ্রিনস্পেন জানিয়েছিলেন যে, আন্ডারওয়ার বিক্রির থেকে অর্থনীতির হাল বোঝা সম্ভব। তিনি জানিয়েছিলেন যে, অর্থনীতি খারাপ হওয়ার ফলে পুরুষেরা আন্ডারওয়ার কেনা বন্ধ করে দেন। এর কারণ হলো আন্ডারওয়ার ভেতরে থাকে। এর ফলে আন্ডারওয়া দেখা যায় না বলে পুরুষেরা তা অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় কেনা বন্ধ করে দেন। এভাবে তাঁরা নিজেদের খরচ বাঁচান।
অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলে ডেটিং বাড়ে
বিশেষজ্ঞদের মতে অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলে ডেটিং ওয়েবসাইটের আয়ও বেড়ে যায়। এর কারণ হল চাকরি চলে যাওয়ার ফলে মানুষের কাছে অনেক অবসর সময় থাকে। সেই সময় তারা বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের শরণাপন্ন হয়। এর ফলে ডেটিং ওয়েবসাইটের চাহিদাও বেড়ে যায়। ২০০৯ সালে মন্দার সময় ম্যাচ ডট কমের প্রফিট বিগত সাত বছরে সব থেকে বেশি হয়েছিল।