আরও পড়ুন: মোটা রিটার্ন চান? এই ৫ লার্জ ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের জন্য আদর্শ!
চিত্রশিল্পীকে তার আঁকা ছবি বিক্রি করতে কোনও গ্যালারি বা নিলাম ঘরের ওপর নির্ভর করতে হবে না। তিনি সরাসরি তাঁর আঁকা ছবিগুলি এনএফটি আকারে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারেন৷ যদি ক্রেতা তৃতীয় ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে, তাহলে চিত্রকরও তার উপর রয়্যালটি পাবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে সেই প্ল্যাটফর্মে যতবার ছবি বিক্রি হবে ততবার সে রয়্যালটি পাবে। ঐতিহ্যগত শিল্পকর্ম বিক্রির ক্ষেত্রে এমনটা হয় না।
advertisement
এনএফটি-তে এই সুবিধাগুলি পাওয়া গেলেও ঝুঁকিও কম নয়। বেশিরভাগ এনএফটি কেনা হয় বিনিয়োগ হিসাবে। আশা করা হয় ভবিষ্যতে তার দাম বাড়বে। আদতে চাহিদা থাকলে তবেই দাম বাড়বে। তাই এনএফটির চাহিদা না থাকলে শেয়ারের মতো এর দামও কমতে বাধ্য।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতির ফলে কমছে সুদ, নতুন বছরে এই দুই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলেই মালামাল!
এনএফটি-র পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে কোনও দামী শিল্পকর্ম বা রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি টুকরো টুকরো করে বিক্রি করা যেতে পারে। অর্থাৎ, একটি ছবির একজন ক্রেতা নয়, অনেক ক্রেতা থাকতে পারে। এবং প্রত্যেকের কাছে সেই ছবির একটি অংশ থাকবে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, ছবির একটা টুকরো নিয়ে ক্রেতা কী করবে? একটা ভালো ছবি দেখার অনুভূতি কী এভাবে পাওয়া সম্ভব? তাছাড়া এনএফটি-ও ক্রিপ্টোর মতোই ব্লকচেইন প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি। ক্রিপ্টোকারেন্সি হ্যাক করার অনেক ঘটনা ঘটেছে। এক্সচেঞ্জ বা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে কারেন্সি তুলে নেওয়া হয়। যখন ক্রিপ্টো কারেন্সি হ্যাক করা সম্ভব তাহলে এনএফটি কেন নয়?
বিনিয়োগকারী যে প্ল্যাটফর্মে ওয়ালেটে এনএফটি কিনেছেন সেটি বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে? এগুলি সাধারণত অ্যামাজনের মতো কেন্দ্রীয় ক্লাউড সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়। সেই সার্ভার হ্যাক হলে এনএফটি-ও চুরি হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন যে এনএফটিগুলিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিতে ত্রুটি রয়েছে। এর একটা বড় সমস্যা হল ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক সংরক্ষণ করা। এনএফটি-র দুটি অংশ রয়েছে - প্রথম স্মার্ট চুক্তি এবং দ্বিতীয় ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক। চুক্তিটি ব্লকচেইনে সংরক্ষণ করা হয়, তবে ব্লকচেইনে আর্টওয়ার্ক সংরক্ষণের ব্যয়ের কারণে চুক্তিতে কেবল শিল্পকর্মের লিঙ্ক বা ইউআরএল দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ইউআরএল-এর মাধ্যমে আর্টওয়ার্ক অ্যাক্সেস করা ঝুকিপূর্ণ হতে পারে।
ব্লকচেইন ডেটা কোম্পানি চেইন্যালাইসিস সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি-সহ বড় বিনিয়োগকারীরা এনএফটি সংগ্রহ থেকে প্রচুর মুনাফা করে। একটি বিখ্যাত শিল্পকর্মের এনএফটি কিনতে হাজার হাজার লোক বিড করে। বড় বিনিয়োগকারীরা বট ব্যবহার করে যাতে তারা কিছু টোকেন পেতে পারে। এর ফলে নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য টোকেন কেনা কঠিন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: পেট্রোল ও ডিজেলের আজকের রেট জারি, দেখে নিন আপনার শহরে কত হল
এনএফটি ভালো না খারাপ তা মাপার কোনও প্যারামিটার নেই। তবে হ্যাঁ এর সুবিধা আছে এবং অসুবিধাও। এমনকী জালিয়াতিও অসম্ভব নয়। বর্তমানে এনএফটি নিয়ন্ত্রণের কোনও আইনি কাঠামোও নেই। অনেকেই এর বিরুদ্ধে। তাঁরা মনে করেন, নিজের কাছে রাখা যায় না এমন কিছুর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করাটা বোকামি। কারণ, এনএফটি আকারে একটি নামিদামী তৈলচিত্র কিনলে সেটা গ্রাহক তাঁর বাড়ির দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখতে পারবেন না।