অনেকে ৭-৮টা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এবং এ জন্য তাঁরা ‘গর্বিত’। কিন্তু এত ক্রেডিট কার্ড কী শুধু দেখানোর জন্য? উত্তরে তাঁরা যা বলছেন তা শুনলে অবাক হতে হয়। অত্যন্ত অবহেলার সঙ্গে তাঁরা এতগুলো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। গাদা গাদা টাকা ধার নেন। কিন্তু পুরো টাকা শোধ করেন না। ন্যূনতম বিল মিটিয়েই ক্ষান্ত থাকেন তাঁরা। এমন মনোভাব নিয়ে অনেকেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। এর প্রধান সমস্যা সমস্যা হল ক্রেডিট কার্ডের অত্যন্ত উচ্চ সুদের হার। এক সময় ফাঁসের মতো তা গলায় চেপে বসবে। ক্রেডিট কার্ডের পিছনের গণিতটা ভালোভাবে বুঝে নিলে সহজেই এসব ঝামেলা এড়ানো যায়।
advertisement
আরও পড়ুন-আজও দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা, ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস রাজ্যের এই জেলাগুলিতে
পাগল হবেন না, শুধু এমএডি দিন: ক্রেডিট কার্ডের প্রেক্ষিতে এমএডি হল ন্যূনতম বকেয়া পরিমাণ। কার্ড অ্যাকাউন্ট নিয়মিত রাখতে নির্ধারিত তারিখের আগে সর্বনিম্ন অর্থ মেটাতে হয়। এই টাকা দিলে বিলম্বিত অর্থ প্রদানের জরিমানা এবং ক্রেডিট স্কোরের উপর নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো যায়। তবে ন্যূনতম অর্থ মেটালেও বকেয়া টাকা এবং তার উপর সুদ কিন্তু দিতেই হবে। অনেকেই জানেন না এই সুদের হার বার্ষিক ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের উচ্চ সুদের হার ভালোভাবে বুঝতে একটা খুব সাধারণ উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরা যাক ক্রেডিট কার্ডের ব্যালেন্স ৩০ হাজার টাকা। এবং ন্যূনতম বকেয়ার পরিমাণ হল ১৫০০ টাকা। তাহলে এখন সামনে কোন পথ খোলা রয়েছে? ১। নির্ধারিত সময়ের আগে বিলের পুরো টাকাটা মিটিয়ে দেওয়া যায়। ২। নির্ধারিত তারিখের আগে ন্যূনতম বকেয়া ১৫০০ টাকা মেটানো যায়। ৩। হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় (এটা বোকামি)।
আরও পড়ুন-কষ্টের টাকা বাঁচাতে চাইলে স্বাস্থ্য বিমা করান, তবে খেয়াল রাখুন এই বিষয়গুলো
এসব ক্ষেত্রে কী হবে? ১। পুরো বিল মেটানোয় কোনও সুদ দিতে হবে না। ২। ৩০ হাজার টাকায় মাত্র ১৫০০ টাকা মেটানোয় বাকি ২৮৫০০ টাকার উপর সুদ নেওয়া হবে। ৩। পুরো ৩০ হাজার টাকার উপরেই সুদ নেওয়া হবে। সঙ্গে জরিমানা। কারণ ন্যূনতম বকেয়াও মেটানো হয়নি।
এই উদাহরণ থেকে শিক্ষা: এখন ৩০ হাজার টাকা বিল পাওয়ার পর ন্যূনতম ১৫০০ শোধ করার অর্থ ২৮৫০০ টাকা বকেয়া। এখন যদি কেউ নির্ধারিত তারিখের পর আবার ক্রেডিট কার্ডে ১৫ হাজার টাকা খরচ করেন তাহলে তিনি সুদ মুক্ত কোনও সময় পেলেন না। বিলের পরবর্তী নির্ধারিত তারিখের পরিবর্তে লেনদেনের প্রথম দিন থেকে সুদ নেওয়া হবে। সহজ কথায়, ২৮৫০০ টাকা (প্রধান বকেয়া) + ১৫০০০টাকা (নতুন খরচ) + অতীতের বকেয়া সুদ এবং নতুন খরচের উপর সুদ দিতে হবে।
তাহলে উপায়: ভুলেও একাধিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা চলবে না। বেপরোয়াভাবে ব্যয় এড়িয়ে চলতে হবে। তবেই সুদ মুক্ত সময় মিলবে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুরো বিল শোধ করতে হবে। তবেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহকরা।