চিকিৎসার খরচ কীভাবে কর সাশ্রয় করবে?
নিয়মিত চিকিৎসাজনিত খরচ:
চাকরিজীবীরা এক্ষেত্রে দারুন একটি সুবিধা পান। ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসাজনিত খরচের উপর রিইম্বার্সমেন্টের ক্ষেত্রে কর ছাড় পাওয়া যায়। এই ধরনের খরচের জন্য পেশ করতে হবে ফার্মেসি বিল, মেডিকেল চেক-আপের বিল অথবা ডাক্তারের কনসাল্টেশন ফি সংক্রান্ত বিল ইত্যাদি। পরিবারের যে কারও অর্থাৎ নিজের কিংবা স্বামী অথবা স্ত্রী, সন্তান কিংবা মা-বাবার চিকিৎসার খরচের ক্ষেত্রে এই ছাড় মিলতে পারে। কর ছাড় ক্লেম করার জন্য নিয়োগকারী সংস্থার নিয়ম অনুসারে শুধু প্রমাণপত্র হিসেবে বিল জমা করতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: শসা চাষের বিশেষ পদ্ধতি! রাজস্থানের কৃষক রাতারাতি ধনী হলে কপাল খুলবে সবারই!
প্রিভেন্টিভ মেডিকেল চেক-আপ:
পরিবারের যে কোনও সদস্যের জন্য কোনও রকম প্রিভেন্টিভ মেডিকেল টেস্টের জন্য প্রদত্ত চার্জের উপর ডিডাকশন দাবি করা যায়। সে-ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিডাকশন ক্লেম করা যাবে। যাতে এই ডিডাকশনের সর্বাধিক লাভ উপভোগ করা যায়, সেই বিষয়ে সাহায্য করতে বহু প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব আজকাল ৫ হাজার টাকার চেক-আপের সুযোগ দিয়ে থাকে। এর জন্য শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ল্যাবের অরিজিনাল ইনভয়েস কিংবা বিল নিয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: গৃহঋণ পরিশোধ করবেন প্রি-পেমেন্ট ভিত্তিতে না টাকা বিনিয়োগ করাই ভাল?
পরিবারের প্রতিবন্ধী নির্ভরশীল সদস্যের মেডিকেল ট্রিটমেন্ট:
পরিবারে প্রতিবন্ধী নির্ভরশীল সদস্য থাকলে টাকা-পয়সা প্রচুর খরচ হয়, এমনকী মানসিক চাপও থাকে। এর জন্য ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের ৮০ডি ধারার নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারে যদি প্রতিবন্ধী নির্ভরশীল সদস্য থাকেন, তাহলে ৫০ হাজার টাকার স্থায়ী ডিডাকশনের সুবিধা পাওয়া যাবে। এই সদস্য হতে পারেন নিজের স্বামী অথবা স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা এমনকী ভাই-বোনও। যদি সেই সদস্যের প্রতিবন্ধকতা ৮০ শতাংশেরও বেশি হয়, তাহলে করযোগ্য বেতনের উপর বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা ডিডাকশন ক্লেম করা যেতে পারে। আর এটা ক্লেম করার জন্য প্রয়োজন হবে সরকারি হাসপাতালের তরফ থেকে প্রদত্ত প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত একটি মেডিকেল সার্টিফিকেটের। সেই সঙ্গে ওই সদস্যের মেডিকেল ট্রিটমেন্ট, ট্রেনিং ও অন্যান্য মেডিকেল খরচ সংক্রান্ত সেলফ-ডিক্ল্যারেশনও জমা করতে হবে। এছাড়া অরিজিনাল বিলও পেশ করা বাঞ্ছনীয়।
পরিবারের সদস্যদের কিছু নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসার খরচ:
পরিবারের কোনও সদস্য যদি ৪০ শতাংশেরও বেশি প্রতিবন্ধী হন এবং তাঁর নির্দিষ্ট কিছু রোগ থাকে, তাহলেও ডিডাকশনের সুবিধা পাওয়া যায়। আয়কর আইনের ৮০ডিডিবি ধারার আওতায় এটা করা যাবে। এই নির্দিষ্ট কিছু রোগের তালিকায় পড়ছে ক্যানসার, এডস, ক্রনিক রেনাল ফেলিওর, হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া এবং নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার। আর এই ডিডাকশনের পরিমাণ নির্ভর করে নির্ভরশীল সদস্যের বয়সের উপরে। ক্লেম করার জন্য প্রমাণ হিসেবে লাগবে কোনও স্পেশালিস্ট ডাক্তারের থেকে নেওয়া ফর্ম ১০-১, মেডিকেল ট্রিটমেন্টের প্রেসক্রিপশন এবং বিল।
পারিবারিক হেলথ ইনস্যুরেন্স:
আজকালকার দিনে স্বাস্থ্য বিমা অত্যন্ত জরুরি একটা বিষয়। আর আয়কর আইনের ৮০ডি ধারা অনুযায়ী, কেউ স্বাস্থ্য বিমা করালে তার ইনসেন্টিভ হিসেবে প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। পারিবারিক স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রেও এই ছাড় মিলবে। এর জন্য শুধুমাত্র একটি পলিসি কপি, প্রিমিয়াম রিসিট জমা দিতে হবে। আর ডিডাকশনের সুবিধা পেতে প্রিমিয়ামের টাকা কিন্তু নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেই দিতে হবে।