তমলুক শহরে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনন্যা রায়। ব্যাঙ্গালোর থেকে নার্সিং পাশ করে বর্তমানে বাড়িতে। তাঁর ভাবনা ছিল, জীবনের বিশেষ মুহূর্ত বা প্রিয়জনের স্মৃতি ধরে রাখার এক নতুন উপায় খুঁজে বের করা। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় রেজিন দিয়ে তৈরি গহনা ও সংরক্ষিত সামগ্রীর ধারণা। নার্সিং পড়ার সময়ই রেজিন দিয়ে হ্যান্ডমেড জুয়েলারি ও নানা ধরনের কাস্টমাইজ গিফট আইটেম তৈরি করার কাজ শুরু করেন।
advertisement
রেজিন ফুল দিয়ে তৈরি নেকলেস, ব্রেসলেট, রাখি, ঘড়ি, শো-পিস ইত্যাদি। এই সমস্ত জিনিস শুধু আকর্ষণীয় নয়, বরং বছরের পর বছর টেকসই ও সুন্দর থাকে। তবে শুরুটা সহজ ছিল না। বাজারে আসল-নকল পণ্যের ভিড়ে নিজের জায়গা করে নেওয়া, দামি কাঁচামালের খরচ সামলানো সবকিছুই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তবু হাল ছাড়েননি অনন্যা!
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অনন্যার পাশাপাশি এই কাজে হাত লাগিয়েছে তার দিদি অভিষিক্তাও। পূর্ব মেদিনীপুরের অনন্যার দিদি জানান, ‘বোন ব্যাঙ্গালোরে নার্সিং পড়ার সময় শুরু করেছিল রেজিন দিয়ে জুয়েলারি থেকে উপহার সামগ্রী বানানোর কাজ। নার্সিং পাশের পর বাড়িতে সেই কাজ ছোট ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। বোনের পাশাপাশি আমিও হাত লাগাই। বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী ও জুয়েলারির অর্ডার আসে। সেইমতো বানিয়ে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সারা বছরই অর্ডার আছে। তবে উৎসবের সময়ে অর্ডারের পরিমাণ বাড়ে। রেজিনের দাম অনেকটাই। ফলে রেজিন দিয়ে জুয়েলারি বা উপহার সামগ্রী বানানো ব্যয়বহুল।”
গুণগত মানে জোর দিয়ে ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস ও প্রশংসা দুটোই অর্জন করেছেন তাঁরা। এখন তাঁদের তৈরি রেজিন জুয়েলারি ও সামগ্রী শুধুমাত্র জেলার মধ্যেই নয়, ভিনরাজ্যেও কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে। স্থানীয় বাজার থেকে অনলাইন গ্রাহক—সব জায়গাতেই প্রশংসা কুড়োচ্ছে তাঁদের তৈরি পণ্য। এই দুই বোনের সাফল্যের গল্প আজ অনেক মহিলার কাছে অনুপ্রেরণা। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, মেয়েরা চাইলে নিজের মনের জোরে গড়ে নিতে পারে নিজের পথ। নারীর আত্মনির্ভরতা ও সৃজনশীলতার এই যাত্রা দেখিয়ে দিচ্ছে বর্তমান সময়ে উদ্যোগই হতে পারে পরিবর্তনের চাবিকাঠি।