অর্থমন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের অর্থনৈতিক বিভাগ এই অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রস্তুত করেছে। আর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানেই এটি তৈরি হয়েছে। এখানে অর্থনীতির অবস্থা এবং ২০২৪-২৫ (এপ্রিল-মার্চ)-এর বিভিন্ন সূচক এবং পরবর্তী অর্থ বছরের জন্য কিছু দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি তুলে ধরা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫ | Union Budget 2025 Live Updates
advertisement
কেন্দ্রীয় বাজেট সংক্রান্ত মুখ্য কিছু বিষয়:
১. ১৮৬০ সালের ৭ এপ্রিল ভারতবর্ষের প্রথম বাজেট পেশ করেছিলেন জেমস উইলসন। তিনি ছিলেন স্কটিশ অর্থনীতিবিদ এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন রাজনীতিবিদ। আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৭ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের প্রথম বাজেট পেশ করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আরকে শানমুখম চেট্টি। এটা ছিল একটা অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট। যা দেশের প্রতিকূল আর্থিক অবস্থার সঙ্গে যুঝতে ১৯৪৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৭.৫ মাসের মেয়াদের জন্য লাগু ছিল।
২. ১৯৭৭ সালে সবথেকে সংক্ষিপ্ত বাজেট বক্তৃতা পেশ করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী হিরুভাই মুলজিভাই প্যাটেল। মাত্র ৮০০ শব্দের ছিল সেই বক্তৃতা।
৩. ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সবথেকে দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে তিনি ২.৪২ ঘণ্টার বাজেট বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি প্রত্যেক বছর একটি পরম্পরাগত এক অনুষ্ঠান হয়, যার নাম হালওয়া সেরিমনি। যেখানে তৈরি করা হয় ভারতীয় মিষ্টি হালুয়া। অর্থমন্ত্রকের যেসব আধিকারিক এবং কর্মী বাজেট তৈরি করেন, তাঁদেরকেই সেই হালুয়া খাওয়ানো হয়। এটা বহুকাল ধরে চলে আসা রীতি। যা আজও মেনে চলছে সরকার।
৪. ১৯৫০ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী জন মাথাইয়ের সময়ে কেন্দ্রীয় বাজেট প্রিন্টিংয়ের সময়ই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এরপর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মিন্টো রোডে শিফট হয়েছিল প্রিন্টিংয়ের প্রক্রিয়া। পরে ১৯৮০ সালে তা নর্থ ব্লক বেসমেন্টে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
৫. প্রায় ৯২ বছর ধরে আলাদা আলাদা ভাবেই পেশ করা হচ্ছিল রেলওয়ে বাজেট এবং কেন্দ্রীয় বাজেট। এরপর ২০১৭ সালে দীর্ঘ পরম্পরার ইতি ঘটিয়ে রেলওয়ে এবং কেন্দ্রীয় বাজেটকে এক করা হয়েছিল।
৬. আবার শব্দ সংখ্যার নিরিখে সবথেকে দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতা পেশ করেছিলেন মনমোহন সিং। ১৯৯১ সালে নরসিমহা রাও সরকারের মেয়াদে মোট ১৮৬৫০ শব্দের বাজেট বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে শব্দ সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেট বক্তৃতা দিয়েছিলেন অরুণ জেটলি। যা ছিল ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট সময়ব্যাপী।
৭. ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাজেট শুধুমাত্র ইংরাজিতেই পেশ করা হয়েছিল। এরপর ১৯৫৫-৫৬ সালে কংগ্রেস শাসিত সরকার হিন্দি এবং ইংরাজিতে বাজেটের কাগজ প্রিন্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সঙ্গে ওই দুই ভাষাতেই বার্ষিক আর্থিক নথি পেশ করা হয়েছিল। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সিডি দেশমুখের উদ্যোগেই এই পরম্পরা তৈরি করা হয়েছিল।
৮. সবথেকে বেশি বাজেট পেশ করার রেকর্ড গড়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ১০টি বাজেট পেশ করেছিলেন। পি চিদম্বরম, প্রণব মুখোপাধ্যায়, যশবন্ত সিনহা এবং মনমোহন সিংয়ের মতো অন্যান্য উল্লেখযোগ্য অর্থমন্ত্রীও একাধিক বাজেট পেশ করেছিলেন।
৯. ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ ওয়ার্কিং ডে-তে বিকাল ৫টায় পরম্পরাগত কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হত। ওই বছর সকাল ১১টায় বাজেট পেশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। ২০১৭ সালে অরুণ জেটলি সেই পরম্পরায় পরিবর্তন এনেছেন। তিনি প্রত্যেক বছর ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করতে শুরু করেন।
১০. ২০২১ সালে কোভিড-১৯ অতিমারীর জেরে ভারতের ইতিহাসে প্রথম বার পেপারলেস ফরম্যাটে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হয়েছিল।
বাজেট অধিবেশন:
বাজেট অধিবেশনের প্রথম ভাগ চলবে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বিরতির পর দুই কক্ষ আবার সম্মিলিত হবে আগামী ১০ মার্চ। এরপর অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটবে আগামী ৪ এপ্রিল।