তবে মালদহের সর্বত্র পাবেন না এই বেগুন। কোথায় পাওয়া যায় এই বিশাল বেগুন জানেন, পুখুরিয়ার রাজাপুরে মূলত চাষ হয় এই বেগুন। এছাড়াও ওই গ্রামের পার্শ্ববর্তী পুরাতন মালদহের মহিষবাথানী , গাজোল ব্লকের পান্ডুয়া এলাকায় কিছু পরিমাণ জমিতে চাষ হয়। এই বেগুনের নাম নবাবগঞ্জের বেগুন।
এই প্রজাতির বেগুন আর অন্য কোথাও চাষ হয় না। এই এলাকার কৃষকেরাই চাষ করেন। কৃষক লাল মহম্মদ বলেন, আমাদের এখানেই এই বেগুন চাষ হয়। অন্য কোথাও আর চাষ হয় না। আমরা বীজ সংরক্ষণ করে রাখি। পরের বছর আবার সেই বিচারই চারা তৈরি করি।
advertisement
আরও পড়ুন: পাখিদের মাঝে নিরিবিলি পরিবেশে! দুর্দান্ত পিকনিক স্পট রয়েছে সামান্য দূরত্বে
প্রতিবছর কৃষকেরা বেগুনের বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। পরবর্তীতে সেই বীজ বপন করেন কৃষকেরা নিজেই। এই প্রজাতির বেগুনের বীজ কোথাও কিনতেও পাওয়া যায় না। প্রাচীন কাল থেকেই এই বেগুনের চাষ হয়ে আসছে মালদহে এমনটাই দাবি কৃষকদের।
একসময় মহান মহানন্দা নদীর তীরে নবাবগঞ্জে বিশাল হাট বসত। কৃষকেরা ওই হাটেই এই বিশাল বেগুন বিক্রি করতেন। হাটের নাম অনুসারেই এই বেগুনের খ্যাতি। তাই এই বেগুনের নাম নবাবগঞ্জের বেগুন। এখনো এই নামেই পরিচিতি বিশাল এই বেগুনের।বর্তমানে বিশাল আকারের এই বেগুনের দাম ১০০ টাকা কেজি।
মালদহ শহরের বাজারে পাওয়া যায়। একটি বেগুনের ওজন অনেক আবার দামও বেশি তাই সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে এখন এই বেগুন। মালদহের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তথা রফতানিকারক উজ্জ্বল সাহা বলেন, এই বেগুনের চাহিদা ক্রমশ রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ছে। আমরা এই বেগুন বিভিন্নভাবে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। মালদহের বিখ্যাত এই বেগুন বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
মালদহ জেলায় উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার তিনটি ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে এই বেগুন বর্তমানে চাষ হচ্ছে। ধীরে ধীরে এই বেগুনের ওজন অনেকটাই কম হচ্ছে। কারণ গতানুগতিক চাষের ফলে। ৮০০ গ্রাম থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হয় একটি বেগুনের ওজন।
এই বেগুন গুলিতে বীজ থাকে প্রায় ৫০ গ্রাম। অন্য কোথাও এই বেগুন চাষ না হওয়ার কারণ, মাটির উর্বরতা আবহাওয়া। মূলত শীতকালেই পাওয়া যায় এই বেগুন। মালদহ জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক সামন্ত লাইক বলেন, মালদহের বিখ্যাত ফসল গুলির মধ্যে নবাবগঞ্জের বেগুন অন্যতম।
জেলার নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় এই বেগুন চাষ হয়। ৮০০ গ্রাম থেকে দুই কেজি পর্যন্ত একটি বেগুনের ওজন হয়। চাহিদাও বাজারে ভাল রয়েছে এই বেগুনের। প্রতিবছর মালদহ থেকে নবাবগঞ্জের বেগুন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। অন্যান্য বেগুনের থেকে স্বাদ একেবারেই আলাদা। তাই মানুষ আগ্রহ দেখান এই বেগুনের প্রতি।
হরষিত সিংহ