এক সময় এই রাজ্যেরই আমলাশোলে আর্থিক অনটনের জেরে অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছিল আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের। জানা গিয়েছিল তাঁরা পিঁপড়ের ডিম খেয়ে কোনরকমের দিন কাটান। বাম আমলের সেই ঘটনা রাজনৈতিক থেকে সামাজিক, সর্বস্তরে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। তবে এখন সেই পিঁপড়ের ডিম’ই আয়ের পথ দেখাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাদুড়িয়া, বসিরহাটের বেশ কিছু বাসিন্দাকে।
advertisement
আরও পড়ুন: জিমনাস্টিকে পরপর দুই বছর দেশের মধ্যে দ্বিতীয় নদিয়ার মেয়ে
গ্রাম বাংলার বাগানে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করা হয় এই লাল পিঁপড়ের ডিম। চৈত্রের কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে এই কারবারের সঙ্গে যুক্তরা রাস্তাঘাট, মাঠে-বাগানে খুঁজে বেড়ান লাল পিঁপড়ের ডিম। সেই পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহ করেই বাড়তি আয়ের মুখ দেখেছেন বাদুড়িয়ার বাবলু আকুঞ্জি। এই লাল পিঁপড়ের ডিম মূলত ছিপ দিয়ে মাছ ধরার টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
বসিরহাট শহরের পাশাপাশি কলকাতার বাজারগুলিতে এর বেশ ভাল চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি ডিম ৭০০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। ওই পেশায় যুক্ত কয়েজন জানান, যে ধরনের পিঁপড়ের ডিম মাছ ধরার জন্য ব্যবহার করা হয় তার চাহিদাই সবথেকে বেশি। সাধারণত লাল রঙের এই পিঁপড়ে ঝোপঝাড় বা বড় গাছের উপরে লার্ভা-নিঃসৃত এক প্রকার সিল্ক দিয়ে তিন-চারটি পাতাকে মুড়ে সেলাই করে থলির মত বানিয়ে নেয়। এই থলি যেমন মজবুত হয় তেমনই দেখতেও সুন্দর। ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে এই বাসার মধ্যেই রেখে দেয় পিঁপড়ের দল। পাকা ফলও এদের খাবার। সেই ডিমগুলিই সুকৌশলে সংগ্রহ করেন বাবলু আকুঞ্জি, আয়ুব গাজির মত কয়েজন। একটি লম্বা বাঁশের মাথায় ডালি বাঁধা হয়। পিঁপড়ের বাসা খুঁজে সেখানে সেই বাঁশটি দিয়ে আঘাত করা হয়। ফলে বাসাটি গাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। আর বাঁশে বেঁধে রাখা ডালিতে এসে জড়ো হয় ডিম।
জুলফিকার মোল্লা