খরগোন, মধ্যপ্রদেশ: রবি মরশুমে গম এবং ছোলার ফসল কেটে নেওয়ার পর বেশিরভাগ কৃষকের ক্ষেতই আপাতত ফাঁকা রয়েছে। এরপর জুন-জুলাই মাসে পরের শস্য রোপণ করা হবে। ফলে প্রায় দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত খালি থাকবে ফসলের ক্ষেত। কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে, খারিফ শস্য রোপণ করার আগে কৃষকরা ফাঁকা ক্ষেতে চিনাবাদাম অথবা গ্রীষ্মের ভুট্টা রোপণ করে অতিরিক্ত উপার্জন করতে পারেন। সেই কারণে কৃষকরা এমন ধরনের শস্য বেছে নিতে পারেন, যা তাঁদের কম সময়ে দারুণ ফলন দেবে।
advertisement
Local 18-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় খরগোন কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সিনিয়র বিজ্ঞানী ড. রাজীব সিং বলেন যে, নিমার এলাকায় গম এবং ছোলার ফসল কাটার পর কৃষকরা ক্ষেত পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এরপর তাতে চিনাবাদাম অথবা গ্রীষ্মের ভুট্টা চাষ করতে পারেন। যদিও চিনাবাদাম রোপণ করার সময় চলে গিয়েছে। আসলে চিনাবাদাম রোপণ করার সঠিক সময় হল ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে। তবুও যাঁদের সুবিধা এবং উৎস রয়েছে, তাঁরা কিন্তু এখনও ক্ষেতে চিনাবাদাম রোপণ করতে পারেন।
কোন প্রজাতির চিনাবাদাম রোপণ করা যেতে পারে?
যদি কৃষকরা এখন চিনাবাদাম রোপণ করতে চান, তাহলে তাঁদের এমন প্রজাতির চিনাবাদাম বেছে নেওয়া উচিত, যা ভাল ফলন দিতে পারে। যাতে সময়ের পরে রোপণ করলেও ফলনে কোনও সমস্যা না থাকে। কৃষি গবেষণা অনুযায়ী, সেই কারণে কৃষকরা JGN-3 এবং JGN-23 প্রজাতির চিনাবাদাম রোপণ করতে পারেন। আসলে এগুলি কম সময়ে দারুণ ফলন দিতে পারে। সবথেকে বড় কথা হল, এই প্রজাতির ফসল ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই পেকে যায়। প্রতি একরে ৭-৮ কেজি বীজ বপন করা যেতে পারে।
কোন প্রজাতির ভুট্টা রোপণ করা যেতে পারে?
একই ভাবে কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা রোপণ করতে পারেন। যাঁরা রবি মরশুমে ভুট্টা রোপণ করেছিলেন, তাঁরা এর পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। কারণ ভুট্টা হল বহুবর্ষজীবী ফসল। যে কোনও মরশুমেই এর চাষ করা যায়। সেই কারণে বাজারে পাওয়া শঙ্কর ভুট্টা-সহ অন্যান্য প্রজাতির ভুট্টা বাজারে পাওয়া যায়। যা ক্ষেতে রোপণ করা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেন যে, সমস্ত প্রজাতিক ভুট্টা যে কোনও মরশুমে রোপণ করা যাবে এবং এর ফলন ভালই হয়। তবে সংক্ষিপ্ত সময়ের প্রজাতিগুলির জন্য নজর রাখতে হয় কৃষকদের।
কতটা সেচের প্রয়োজন?
বিজ্ঞানী ড. সিং বলেন যে, কৃষকদের তখনই চিনাবাদাম বা ভুট্টা শস্য বপন করা উচিত, যখন তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত দ্রবণ এবং জলের ব্যবস্থা থাকবে। যেহেতু এটা গ্রীষ্মকালীন শস্য, এর জন্য আরও সেচের প্রয়োজন হয়। আসলে ৪ থেকে ৫ বার জলসেচ করতে হবে, যতক্ষণ না অঙ্কুরোদগম হচ্ছে। যদিও ক্ষেত অনুযায়ী, এর পরিমাণ বাড়ানো কিংবা কমানো যেতে পারে। এর পাশাপাশি স্থানীয় সার স্প্রে করতে হবে। আর প্রয়োজনীয় পরিমাণে ডিএপি দিতে হবে। যাতে ফসলের ফলন ভাল হয়।