রেপো রেট বাড়লে সরাসরি তার প্রভাব পড়বে মধ্যবিত্তের পকেটে। কারণ এর ফলে গৃহঋণ এবং অন্যান্য ঋণ আরও ব্যয়বহুল হবে। তবে সেপ্টেম্বরের পর সুদের হার বৃদ্ধির প্রক্রিয়া থামবে বলে মনে করছেন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অনিতা রঙ্গন। এর ৩টি বড় কারণ দেখিয়েছেন তিনি।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এ বছর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়িয়েছে ৩ বার। মে এবং জুন মাসে মোট ৯০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর পর আরবিআই অগাস্টে আবার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩ মাসে ব্যাঙ্কগুলিতে ঋণের সুদের হার ১.৪০ শতাংশ বেড়ে ৫.৪০ শতাংশ।
advertisement
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির ফলে চাপ বেড়েছে: সোমবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়েছে। জুলাই মাসে এই হার ৬.৭১ শতাংশের তুলনায় আগস্টে দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চেষ্টা করেও মুদ্রাস্ফীতিকে যে বাগে আনতে পারছে না সেটা স্পষ্ট।
তাই রেপো রেট ফের বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এমপিসি এবার রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ বাড়াতে পারে। জার্মানির ডয়েশ ব্যাঙ্ক এই বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে৷ যদি রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়, তাহলে সুদের হার ৫.৬৫ শতাংশে পৌঁছাবে। প্রসঙ্গত, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চাহিদা কমানোর চেষ্টা করে এবং এর জন্য ঋণ ব্যয়বহুল করা হয়।
লোন এবং হোম লোনের ইএমআই আরও বাড়বে: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়ালে ব্যাঙ্কগুলির ঋণ পরিশোধে সুদের হারও বাড়াবে। আসলে, ব্যাঙ্কের অনেক ঋণ সরাসরি রেপো হারের সঙ্গে যুক্ত। তাই রেপো রেটের যে কোনও পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি সাধারণ মানুষের উপর পড়ে। গত তিন দফায় পলিসি রেট বৃদ্ধির কারণে গৃহঋণ ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এবার তা ৮ শতাংশ অতিক্রম করতে পারে। ফলে ঋণ নেওয়া এখন আরও ব্যয়বহুল হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: পুজোতে কেন্দ্রীয় কর্মীদের ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হচ্ছে ? আসল সত্যিটা কী? কী জানাল সরকার!
সেপ্টেম্বরের পর কি সুদের হার বাড়বে না: প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অনিতা রঙ্গন 'মানি কন্ট্রোল'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের পরে আরবিআই সুদের হার বাড়াবে না। এর জন্য তিনি অপরিশোধিত তেলের দামে পতন, প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশিত জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমানের চেয়ে কম সহ বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি পরবর্তী এমপিসি সভা ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: আকাশের অধিকার! বিশ্বসেরা বিমানসংস্থার তালিকায় এ বছর সেরা ২০-তে জায়গা করে নিল কারা? দেখে নিন
ততদিনে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ (Russia Ukraine War) মোটামুটি শেষের পর্যায়ে। এর প্রভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমাগত কমছে এবং ৯০ ডলারের নিচে চলে যেতে পারে। তেলের দাম কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতিতে বড়সড় স্বস্তি মিলতে পারে বলেই অনুমান।